সকল মেনু

অর্থ পাচারে আরএসআরএম জড়িত কিনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি

সিনিয়র রিপোর্টার : রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস (আরএসআরএম) অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

একইসঙ্গে কোম্পানিটির পাঁচ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন, করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড পরিপালন, আইপিও প্রক্রিয়া, নিয়োগকৃত অডিটরের ভূমিকাও যাচাই করতে চায় কমিশন। এরই ধরাবাহিকতায় কোম্পানিটির বিরুদ্ধে চার সদস্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি।

বুধবার (২৩ মার্চ) এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। এ আদেশ জারির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে গঠিত কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহম্মদ আল মামুন মৃধা (টিম লিডার), সংস্থাটির যুগ্ম পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সিনিয়র ম্যানেজার মো. মাসুদ খান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ডেপুটি ম্যানেজার মোহম্মদ নাজমুল হোসাইন (সদস্য সচিব)।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ এর সেকশন ২১, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অ্যাক্ট, ১৯৯৩ এর সেকশন ১৭ (ক) এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন, ২০১৫ অনুযায়ী এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএসইসি ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত কমিটিকে এ আদেশ জারির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হলো।

তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে জানা গেছে, গঠিত তদন্ত কমিটি রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস অর্থ পাচার সঙ্গে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখবে। পাশাপাশি কোম্পানিটির ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদন খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ও পর্ষদ কমিটি কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কোড যথাযথভাবে পরিপালন করেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে কমিটি।

একইসঙ্গে কোম্পানিটির আইপিও প্রক্রিয়া, ডেবট ক্যাপিটাল ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন তথ্য যাচাই করা হবে। কোম্পানির নিয়োগকৃত অডিটরের কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হবে। পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কোম্পানিটির রপ্তানি সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহের ব্যর্থতার কারণ যাচাই করে দেখবে কমিটি।

আর কোম্পানিটির শীর্ষ কর্মকর্তারা, পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কোম্পানি সচিব, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা, হেড অব ইন্টারনাল কন্ট্রোলসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা নানা অনিয়মে জড়িয়ে সরাসরি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।

এর আগে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি আরএসআরএমের ব্যবসার কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে কোম্পানিটির বিএমআরই প্রকল্প দুই মাসের মধ্যে পুনরায় চালু করাসহ একটি বড় কর্ম পরিকল্পনার প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিতে বলা হয়েছে।

কোম্পানিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কোম্পানিটি ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। গত চার বছরে কোম্পানিটির ব্যবসা ও মুনাফা ধারাবাহিকভাবে সাড়ে সাতগুণের বেশি কমেছে। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরেও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদান করেনি। এরই ধরাবাহিকতায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি আরএসআরএমের ব্যবসার কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা জানতে চায় বিএসইসি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থা যাচাই করার লক্ষ্যে কমিশন তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তদন্তে কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top