সকল মেনু

ওয়ালটনের ভেতর-বাহির !

সিনিয়র রিপোর্টার : বাংলাদেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড ও ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে। গত ৬ মাসে ৪৮৮ কোটি টাকা বা ১৮ শতাংশ আয় বাড়লেও কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে।

অন্যদিকে শর্তানুযায়ী কোম্পানির কর্তৃপক্ষ নতুন আরো ৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার প্রস্তুতি নেয়ার প্রতিদিন কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দর কমছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটনের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ গত জুলাই-ডিসেম্বর বা গত বছরের শেষ ছয় মাসে ওয়ালটন পণ্য বিক্রি করে ৩ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা আয় করেছে। আগের বছর তথা ২০২০ সালের একই সময়ে এ আয় ছিল ২ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা।

সেই হিসাবে আগের বছরের তুলনায় গত বছরের শেষ ৬ মাসে ওয়ালটনের আয় বেড়েছে ৪৮৮ কোটি টাকা বা ১৮ শতাংশ। তা সত্ত্বেও কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে। কারণ, কাঁচামাল ও জাহাজভাড়া বৃদ্ধির কারণে কোম্পানির উৎপাদন খরচ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

ওয়ালটনের শেয়ারপ্রতি দর ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক চিত্র 

২০২০ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ওয়ালটনের বিক্রি হওয়া পণ্যের মোট উৎপাদন খরচ ছিল ১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত বছরের একই সময়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৯২ কোটি টাকায়। অন্যদিকে বিশ্ববাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ও জাহাজভাড়া বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে কোম্পানির মুনাফায়।

অন্যদিকে বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টস, প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক এবং রাষ্ট্রায়াত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ-আইসিবিকে ১০ শতাংশ পূরণ করতে আরো শেয়ার ছাড়তে হবে।

কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে থাকা শেয়ার পুঁজিবাজারে আরো শেয়ার ছাড়তে হবে। ওয়ালটনের মোট শেয়ার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টি। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মাত্র ০.৯৭ শতাংশ বা ২৯ লাখ ৩৮ হাজার ৪০৫টি শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়ে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ শতাংশ পূরণ করতে হলে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের আরো বিক্রি করতে হবে ৯.০৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নির্দেশনার প্রেক্ষিতে শেয়ার বিক্রি করতে ২ বছর সময় দেওয়ার অনুরোধ জানায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। প্রথম বছরে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার বিক্রি করবে ওয়ালটন।

কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টির মধ্যে ২ কোটি ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার ৪২৯টি শেয়ার ছাড়তে হবে। সেই শেয়ার ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ। নতুন শেয়ার যুক্ত হলে দর সমন্বয় হলে দর পতনের আশঙ্কাও রয়েছে। কোম্পানির কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই শেয়ারপ্রতি দরের বিশাল পিরামিড ভেঙ্গে নিচে নামছে।

ওয়ালটনের প্রথম দিনের শেয়ার লেনদেন থেকে ৩ জানুয়ারি’২২ পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি দরের উত্থান-পতনের চিত্রটি বৃহস্পতিবার নেয়া

বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১ হাজার ৬০ টাকা। সকালে ১হাজার ৫৯ টাকা দর শুরু হয়ে দিনের সর্বোচ্চ দর ছিল ১ হাজার ৬০ টাকা।

২০২০ সালে তালিকাভুক্ত হয়েই ২০০ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণাকারী জায়ান্ট কোম্পানিটির মাত্র দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।

বুকবিল্ডিং প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে ১০০ টাকা তোলা কোম্পানির কাট অফ প্রাইস ছিল ২৮৩ টাকা।

২০২০ সালে ২৩ সেপ্টেমার ৩৭৮ টাকায় লেনদেন শুরু হলেও ৮ কার্যদিবস ‘হল্ট’ হওয়ার পরে প্রথম ১হাজার ২ টাকায় স্বাভাবিক লেনদেনে ফেরে। পর্যায়ক্রমে তা সর্বোচ্চ চূড়া স্পর্ষ করলেও এখন তা ভাঙতে শুরু করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top