Homeঅনুসন্ধানী প্রতিবেদনআশরাফ টেক্সটাইল মিলসের ২২৫ কোটি টাকা লোপাট

আশরাফ টেক্সটাইল মিলসের ২২৫ কোটি টাকা লোপাট

সিনিয়র রিপোর্টার : আশরাফ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের পরিচালকরা অভিনব কায়দায় ২২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোম্পানির সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে এই টাকা সরিয়েছেন পরিচালকরা।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ওভার-দ্য-কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) শেয়ার লেনদেন হতো। ১৬ সেপ্টেম্বর, বিএসইসি ওটিসি বাজার বাতিল করে এবং আশরাফ টেক্সটাইল মিলসহ ১৬টি কোম্পানিকে দেশের স্টক এক্সচেঞ্জের ক্ষুদ্র মূলধনী প্ল্যাটফর্মে লেনদেন করার অনুমোদন দেয়।

২০১২ সালের নিরীক্ষকদের রিপোর্ট অনুযায়ী, কোম্পানিটি ২০০৬ সালে তার উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এবং তারপর থেকে সব যন্ত্রপাতি বিক্রি করতে শুরু করে। গাজীপুরের টঙ্গীর আশরাফাবাদে মোট ৩২.৮২বিঘা বা ১০৮৫ ডেসিমেল জমি কর্ণফুলী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছে ৭৫ কোটি টাকায় বিক্রি করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পদের বাজার মূল্য হতে পারে ৩২৫.৫ কোটি টাকা। সে তুলনায় অনেক কম দাম বলা হয়েছে। সুতরাং, বিক্রয় মূল্য তৎকালীন বাজার মূল্যের তুলনায় যথেষ্ট কম বলে মনে হচ্ছে।

২০১২ সালের আর্থিক বিবৃতি থেকে দেখা যায় কোম্পানিটির স্থায়ী সম্পদ, জমি এবং ফ্লোর বিক্রির আয় থেকে ২১.৪৫ কোটি টাকার সুরক্ষিত ঋণ নিষ্পত্তি করেনি।

২০১০ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, বিক্রিত পণ্যের মূল্য শূন্য ছিল। মোট পরিচালন ব্যয় ছিল ১.৯৭ কোটি টাকা (এমনকি ইনভেন্টরি বৃদ্ধির জন্য কোনও নগদ বহিঃপ্রবাহও চিহ্নিত করা হয়নি) যেখানে নগদ প্রবাহ বিবৃতিতে ব্যয় এবং ব্যয়ের জন্য অর্থপ্রদান ২৫.৭৫ কোটি টাকা হিসাবে দেখানো হয়েছে।

বিএসইসি বলেছে, ২০১২ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির সাধারণ রিজার্ভ দেখানো হয়েছে ১৫.৮৯ কোটি টাকা। যেখানে নগদ এবং ব্যাংক হিসেবে দেখানো হয়েছে মাত্র ০.৭৬ লাখ টাকা।

বিএসইসি বলেছে, ‘কোম্পানির সম্পদ, জমি, ভবন এবং যন্ত্রপাতি বিক্রির বিষয়ে তথ্য শেয়ারহোল্ডারদের কাছে যথাযথভাবে প্রচার করা হয়নি এবং শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে যথাযথ অনুমোদন পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, কমিশনের উচিত ওটিসি মার্কেটের আওতাধীন প্রতিটি কোম্পানির তদন্ত করা। যদি নিয়ন্ত্রক তহবিল আত্মসাৎসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পায়, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

কোম্পানির প্রাক-আইপিও পরিশোধিত মূলধন ছিল ৪০ লাখ টাকা এবং বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ১০.৫০ কোটি টাকা। কোম্পানিটি তার শেয়ারের ডিম্যাট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেনি, যা সিকিউরিটিজ নিয়মের লঙ্ঘন।

বিএসইসি রোববার কোম্পানির কাছ থেকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিভিন্ন নথি এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রসহ ব্যাখ্যা চেয়েছে। একই সাথে ডিএসই,সিএসই ও আইসিবির কাছে এই সংক্রান্ত কোন নথি থাকলে তা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত