সকল মেনু

বন্যাকবলিত এলাকায় ব্যাংকিং সেবা বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে গ্রাহক

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ অন্যান্য বন্যাকবলিত এলাকায় সব ব্যাংকের শাখা বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পানিবন্দি হওয়ায় বন্ধ শাখার কাছের শাখা থেকে জরুরি ব্যাংকিং সেবা চলমান রাখতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই ব্যাংকগুলো তাদের কয়েকটি শাখায় সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। আর বিভিন্ন ক্ষতির দিক বিবেচনা করে অনেক ব্যাংকের এটিএম বুথ ও এজেন্ট পয়েন্টে টাকা ও কিছু প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদী সরিয়ে ফেলেন। বন্যায় পানিবন্দি এলাকায় ব্যাংকের শাখা বন্ধ রাখায় গ্রাহকরা পড়েন সীমাহীন দূর্ভোগে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সিলেট, সুনামগঞ্জ, রংপুর ও কুড়িগ্রামসহ কয়েকটি জেলার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকের যে সব শাখা বা উপশাখা বন্যাজনিত কারণে স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না, সেসব শাখা, উপশাখা, এজেন্ট পয়েন্ট, এটিএম বুথ বন্ধ রেখে গ্রাহকদের নিকটবর্তী শাখা থেকে জরুরি ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পর অনতিবিলম্বে গ্রাহকদের সংশ্লিষ্ট শাখা ও উপশাখা থেকে ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার যাবতীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জানান, বৃহত্তর সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় ওইসব এলাকায় ব্যাংকের শাখা ও উপশাখা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় এটিএম ও এজেন্ট পয়েন্টের সেবা অনকটা বন্ধ হয়েছে। আর ব্যাংকের ভোল্টের নিরাপত্তা ইস্যু আগে থেকেই আমলে নিয়ে প্রয়োজনে স্থানান্তর করেছে কয়েকটি ব্যাংক।

কতটি শাখা বা এটিএম বন্ধ রাখা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো আমাদের নির্দিষ্ট সংখ্যার তালিকা দেয়নি। তবে যেখানে সমস্যা সেখানকার সব শাখা ও এটিএম বন্ধ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এছাড়া অধিকাংশ ব্যাংকের ভোল্ট দুই বা তিনতলায় হওয়ায় সেসব শাখায় ভোল্ট নিয়ে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। মূলকথা, গ্রাহক যেতে না পারলে ব্যাংক খোলা রেখে লাভ নেই।

এর আগে, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো. শিরিন গত শুক্রবার তার ফেসবুক স্টাটাসে লিখেছেন, আমাদের ৫০ টি এটিএম বুথ বন্যার পানিতে ডুবেছে।’

রাষ্ট্রায়াত্ত জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, বন্যায় ব্যাংকিং সেবা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে সুনামগঞ্জের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে। আমাদের একজন মহাব্যবস্থাপক বিষয়টি দেখভাল করে তিনি হালনাগাদ প্রতিবেদন দিচ্ছেন। গ্রাহকের সব চাহিদা আমরা মাথায় রেখে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। তবে যেখানে চালানো সম্ভব হচ্ছে না, সেসব শাখা বন্ধ রাখা হয়েছে।

ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী রেজা ইফতেখার বলেন, আমাদের বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে প্রচুর পানি। বিশ্বনাথ উপজেলায় আমাদের একটি শাখায় কোমর পরিমাণ পানি ঢুকে গেছে। গ্রাহকরা যাতে ব্যাংকে আসতে পারে, সেজন্য আর আমরা এটিএমগুলো আগে সরিয়ে রেখেছি। যে কারণে বন্যাকবলিত অনেক স্থানে এটিএম সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।

রূপালী ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা এহতেশামুজ্জামান বলেন, সিলেটে দুটো শাখার নিচে পানি জমেছে। তবে ব্যাংকের অধিকাংশ শাখা আমাদের নিজস্ব ভবনে ও দুই ও তিনতলায়  অবস্থিত হওয়ায় ব্যাংকের কোন সমস্যা নেই। আর স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহায়তা রেমিট্যান্স কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

ডাচ বাংলা ব্যাংকের বিশ্বনাথের একজন গ্রাহক বলেন, এজেন্ট পয়েন্ট ও এটিএম বুথ বন্ধ থাকায় আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। একদিকে বন্যা ও অপরদিকে হাতে নগদ অর্থের ঘাটতি বিপদকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top