Homeখাতওয়ারী সংবাদউত্তরা ফাইন্যান্স: শামসুল আরেফিনের বিদেশ যাত্রা ঠেকাতে দুদককে চিঠি

উত্তরা ফাইন্যান্স: শামসুল আরেফিনের বিদেশ যাত্রা ঠেকাতে দুদককে চিঠি

সিনিয়র রিপোর্টার: আর্থিক প্র‌তিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অপসারিত হয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শামসুল আরেফিন। তার বিদেশ যাত্রা ঠেকাতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) চি‌ঠি দি‌য়ে‌ছে আর্থিক প্র‌তিষ্ঠানটি। দুদকে পাঠানো চিঠির একটি কপি বাংলাদেশ ব্যাংকেও পাঠানো হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা‌ গে‌ছে।

উত্তরা ফাইন্যান্সের চল‌তি দা‌য়ি‌ত্বে থাকা এম‌ডি মুন রানী দাসের পাঠা‌নো চিঠিতে এস এম শামসুল আরেফিন যেন কোনোভাবেই দেশ ত্যাগ না করতে পারেন সেজন্য তার পাসপোর্ট জব্দসহ বিদেশ পালানোর সুযোগ বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী রহমান রহমান হকের বিশেষ নিরীক্ষায় শামসুল আরেফিনের বিপুল পরি

এস এম শামসুল আরেফিন

মাণ অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে। তবে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম এখনও চলমান। এরই ধারাবাহিকতায় তার বিরুদ্ধে দুদকসহ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশনা দেয়া হয়।

এর আগে ২৩ জুন (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ প্রতিষ্ঠানটির এমডি এস এম শামসুল আরেফিনকে অপসারণ করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেয়া অপসারণের চিঠিতে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এর ২০(৩) ধারার আওতায় উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে বিশেষ নিরীক্ষা সম্পাদনের জন্য নিযুক্ত সিএ ফার্ম রহমান রহমান হকের (কেপিএমজি) করা বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানটিতে সংঘটিত ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থেকে প্রতিষ্ঠান ও আমানতকারীদের জন্য ক্ষতিকর কার্যকলাপে যুক্ত থাকায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শামসুল আরেফিনকে ২৩ জুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

সেইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার করতে নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখিত বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে আরেফিন জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এস এম শামসুল আরেফিন দায়িত্বে আসার পর বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে বেসরকারি খাতের আর্থিক প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্স। অনুমোদন ছাড়াই ঋণ নিয়েছে পরিচালকরা। নামে-বেনামে করেছে অর্থ আত্মসাৎ। ঋণ-আমানতের তথ্যে রয়েছে গড়মিল। বারবার সতর্ক করার পরও টনক নড়েনি। পরে বাধ্য হয়ে অনিয়ম খুঁজে বের করতে উত্তরা ফাইন্যান্সে নিরীক্ষক নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে ২০১৮ সালে তিন গ্রাহকের ঋণের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোতে (সিআইবি) ভুল তথ্য পাঠিয়েছিল উত্তরা ফাইন্যান্স। পরে ওই তিন গ্রাহককে ঋণ দিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ভুল তথ্য দেয়ার অপরাধে উত্তরা ফাইন্যান্সকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে জরিমানা মওকুফ চেয়ে আবেদন করলেও তা নাকচ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ দিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ পরিদর্শনে উত্তরা ফাইন্যান্সের কেলেঙ্কারির প্রমাণ পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির একাধিক পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়েই নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়েছেন। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি তাদের অনেক লেনদেনের তথ্য গোপন করতে নথিপত্রও গায়েব করে ফেলে।

এসব অনিয়মের কারণে উত্তরা ফাইন্যান্সের ২০১৯ ও ২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদন সংশোধনের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত