Homeফান্ডামেন্টাল ডিটেইলসনাভানা ফার্মার দাপট, দাম বাড়ার শীর্ষে

নাভানা ফার্মার দাপট, দাম বাড়ার শীর্ষে

সিনিয়র রিপোর্টার: দেশের শেয়ারবাজার গত সপ্তাহ কিছুটা পতনের মধ্য দিয়ে পার করেছে। এই পতনের বাজারে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে নতুন তালিকাভুক্ত নাভানা ফার্মা। গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের কাছে পছন্দের শীর্ষে ছিল কোম্পানিটির শেয়ার। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে এই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার।

গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের প্রতি কার্যদিবসেই নাভানা ফার্মার শেয়ারের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬০ দশমিক ১৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ১৯ টাকা ২০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৫১ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩১ টাকা ৯০ পয়সা।

শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি গত ১৮ অক্টোবর থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু করেছে। লেনদেনের প্রথমদিন থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি কার্যদিবসে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।

ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ ওষুধ কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। সারাদেশে ৪৮৬টি মানবদেহের ও ভেটেরিনারি ৪৮টি পণ্য বাজারজাত করা এ কোম্পানিটির সেফালোস্পোরিন ইউনিটের সংস্কার, উৎপাদন ভবন নির্মাণে, নতুন ইউটিলিটি ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিল্ডিং নির্মাণের জন্য শেয়ারবাজার থেকে এ টাকা সংগ্রহ করেছে।

নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নিজস্ব জমিতে ওষুধ উৎপাদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ১৯৮৬ সালে। ১৯৮৮ সালে সাধারণ উৎপাদন ইউনিট চালু করে কোম্পানিটি। ২০০৩ সালে ভেটেরিনারি প্রোডাকশন ইউনিট শুরু হয়। ২০০৯ সালে সেফালোস্পোরিন ইউনিট শুরু করা হয়, যা একটি উচ্চমানের সেফালোস্পোরিন সুবিধা নিশ্চিত করে এবং ২০১২ সালে এসভপিও ইউনিট শুরু করা হয়। আর ২০১৩ সালে পেনিসিলিন ইউনিটের নতুন সুবিধা শুরু করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ৪ হাজারের বেশি জনবল রয়েছে।

নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস থেকে সারাদেশে ৪৮৬টি হিউম্যান (মানবদেহের) ও ভেটেরিনারি ৪৮টি পণ্য বাজারজাত করা হচ্ছে। এ কোম্পানিটির বেশিরভাগ বিক্রয় গ্রামীণ, টায়ার-২ এবং টায়ার-৩ শহরে কেন্দ্রীভূত হয়। যেখানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ বসবাস করে।

শেয়ারবাজারে আসতে যাওয়া নাভানা ফার্মা ফোরপি এবং এমএসপি জরিপ অনুসারে প্রেসক্রিপশন বিবেচনায় ১৫তম বৃহত্তম কোম্পানি এবং ২০২২ সালে আইএমএসর কিউ-১ জরিপে বাজার অবস্থান, বাজার শেয়ার ও বিক্রয় বৃদ্ধির হারের বিবেচনায় কোম্পানিটি বাংলাদেশে ২৬তম অবস্থানে রয়েছে।

শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর ৮ কার্যদিবসের মাথায় কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বছরটিতে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৪২ পয়সা। আর ২০২২ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৩ টাকা ৪১ পয়সা।

এদিকে শেয়ারের দাম বাড়ার পরও বিনিয়োগকারীদের বড় অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে চাননি। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র ১৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। গত সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এরপরের স্থানটিতে রয়েছে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ। সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের ২১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, এডিএন টেলিকম ১৮ দশমিক ৯১ শতাংশ, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ, ওরিয়ন ইনফিউশনের ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ১২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং বসুন্ধরা পেপারের ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ দাম বেড়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত