Homeকোয়ার্টার রিভিউক্রাউন সিমেন্ট কোম্পানির হিসাবে গরমিল !

ক্রাউন সিমেন্ট কোম্পানির হিসাবে গরমিল !

সিনিয়র রিপোর্টার: সিমেন্ট খাতের কোম্পানি ক্রাউন সিমেন্ট কোম্পানির ৯ মাসের প্রান্তিক হিসাবের সঙ্গে চূড়ান্ত হিসাবে অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েছে। কোম্পানিটি ৯ মাসে যে মুনাফা করেছে, পরের ৩ মাসেই তার ৩ গুণের কাছাকাছি লোকসান দিয়েছে।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ বা শেয়ারপ্রতি এক টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করে যে হিসাব প্রকাশ করেছে তাতে এই বিষয়টি উঠে এসেছে। কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৫৪ পয়সা বা ২২ কোটি ৮৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছে চূড়ান্ত হিসাবে।

শেয়ারপ্রতি দরের চিত্র

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দর ছিল ৭৪.৪০ টাকা।

তবে গত মার্চ শেষে তিন প্রান্তিকের যে হিসাব দেয়া হয়, তাতে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৯১ পয়সা। ফলে তাদের মুনাফা ছিল ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এই তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৪৫ পয়সা, যা টাকার অঙ্কে ৩৬ কোটি ৮২ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

২০২০ সালেও কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়েছিল। সে বছর তাদের শেয়ারপ্রতি ৮৯ পয়সা লোকসান হয়। তবে গত বছর লোকসান থেকে বের হয়ে ৫ টাকা ৭৯ পয়সা ৮৫ কোটি ৯৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা মুনাফা দেখায়। সে বছর তারা শেয়ারপ্রতি ২ টাকা বা ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়।

ভালো ব্যবসা দেখিয়ে পুঁজিবাজার থেকে ২০১০-১১ অর্থবছরে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে টাকা তোলে ক্রাউন সিমেন্ট। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের বিপরীতে প্রিমিয়াম হিসেবে ১০১ টাকা ৬০ পয়সা নিয়ে শেয়ার ইস্যু করে ১১১ টাকা ৬০ পয়সায়।

তালিকাভুক্তির বছরে ৩৫ শতাংশ বোনাস ও পরের বছরে ২০ শতাংশ বোনাস দেয় কোম্পানিটি। এই বোনাস শেয়ার হিসাব করলে শেয়ারদর পড়ে ৬৮ টাকা ৯০ পয়সা।

২০১৩ সালে ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের পরের বছর ১০ শতাংশ কমিয়ে ২০১৪ সালে ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়।

ধারাবাহিকভাবে কমে ২০১৫ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ, ২০১৭ সালে ২০ শতাংশ, ২০১৮ সালে ১৫ শতাংশ, ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ ও ২০২১ সালে ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়।

কোম্পানিটির আইপিও পূর্ব সময়ে অর্থাৎ ২০০৮-০৯ অর্থবছরের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৯ টাকা ৩৯ পয়সা।

গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি ৪ টাাক ৪৫ পয়সা, পরের বছর ২ টাকা ১৩ পয়সা, ২০১৯ সালে ১ টাকা ৬৯ পয়সা আয় দেখানোর পরের তিন বছরের দুই বছরই লোকসান দেখানো হলো।

প্রায় এক যুগ পর কোম্পানিটির বর্তমান শেয়ারদর ৭৪ টাকা ৪০ পয়সা, যা শেয়ারটির ফ্লোর প্রাইস। এই দরে শেয়ারটি কিনতে চাইছেন না ক্রেতারা। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ শেয়ারের বিক্রয়াদেশ থাকলেও ক্রেতা থাকে না বললেই চলে।

এবার মুনাফায় ধসের কারণ হিসেবে ডিএসইর মাধ্যমে কোম্পানি জানিয়েছে, কাঁচামালের দাম ও ভাড়া বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় লোকসান এবং মিনিমাম ট্যাক্স ধার্য করার ফলে আয় কমেছে।

যদিও একই সময়ে এই খাতের আরেক কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন বলছে ভিন্ন কথা। অভিহিত মূল্যে পুঁজিবাজারে আসা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের চলতি বছরের ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৮৫ পয়সা। আগের বছরের এই সময়ে ছিল ২ টাকা ৬৬ পয়সা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত