Homeবিশেষ সংবাদমেঘনা গ্রুপের বহরে যুক্ত হচ্ছে আরো ৪টি জাহাজ

মেঘনা গ্রুপের বহরে যুক্ত হচ্ছে আরো ৪টি জাহাজ

শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী: চীনে তৈরি নতুন আরো তিনটি জাহাজ- মেঘনা প্রেস্টিজ, মেঘনা হোপ এবং মেঘনা প্রোগ্রেস ধাপে ধাপে মেঘনা গ্রুপের বহরে যুক্ত হবে। নতুন এই চারটি জাহাজে কর্মসংস্থান হবে ১০০ বাংলাদেশি নাবিকের। বর্তমানে নিবন্ধিত সমুদ্রগামী দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা ৯১টি। এগুলোর বেশিরভাগই বাল্ক ক্যারিয়ার।

বাংলাদেশি পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজের বহরে যুক্ত হচ্ছে মেঘনা গ্রুপের নতুন ৪টি জাহাজ। পণ্য নিয়ে ‘মেঘনা ভিক্টোরি’ নামের বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজটি সাগরে ভাসবে চলতি নভেম্বরের ১৮ অথবা ২০ নভেম্বর।

৬৬ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজটিতে মেঘনা গ্রুপের বিনিয়োগ ৩৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার।

নৌ বাণিজ্য দপ্তর বা মার্কেন্টাইল মেরিন অফিসের (এমএমও) তথ্যমতে, বর্তমানে নিবন্ধিত সমুদ্রগামী দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা ৯১টি। এগুলোর বেশিরভাগই বাল্ক ক্যারিয়ার।

মেঘনা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মার্কেন্টইাল শিপিং -এর প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু তাহের বলেন, নতুন তৈরি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজটির সমুদ্র যাত্রা শুরু করতে প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এই বাল্ক ক্যারিয়ারটি দেশের বেসরকারি মালিকানাধীন জাহাজের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং বেশি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন।

তিনি আরো বলেন, চীনে তৈরি নতুন আরো তিনটি জাহাজ- মেঘনা প্রেস্টিজ, মেঘনা হোপ এবং মেঘনা প্রোগ্রেস ধাপে ধাপে মেঘনা গ্রুপের বহরে যুক্ত হবে। ২০২৩ সালে জানুয়ারি, মার্চ এবং মে মাসে জাহাজ তিনটিতে পণ্য পরিবহন শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।

নতুন এই চারটি জাহাজে কর্মসংস্থান হবে ১০০ বাংলাদেশি নাবিকের। ৪টি নতুন জাহাজে মেঘনা গ্রুপের বিনিয়োগ ১০৫ মিলিয়ন ডলার। মেঘনা গ্রুপের বহরে বর্তমানে জাহাজের সংখ্যা ১৮টি। নতুন চারটি যুক্ত হলে গ্রুপটির বহরে জাহাজের সংখ্যা হবে ২২ টি।

মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, নতুন এই চারটি জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে বাংলাদেশের পতাকা বহন করবে। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের জন্য গৌরবের। এছাড়া পণ্য পরিবহন করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।

তিনি বলেন, প্রতিটি জাহাজে ২৫ জন নাবিকের এমপ্লয়মেন্ট হবে। বিদেশি নাবিকদের মতো একই ক্যাটাগরিতে তারা বেতন পাবেন। প্রতিটি জাহাজকে কেন্দ্র করে তীরে কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে ৫০ জনের।

মেঘনা গ্রুপের বহরে থাকা বাল্ক ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ মুল্য ৩৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার। ছোট বড় জাহাজ হিসেবে প্রতিটির গড় মুল্য ২৫ মিলিয়ন ডলার। সেই হিসেবে ২২টি জাহাজে বর্তমানে মেঘনা গ্রুপের বিনিয়োগ ৫৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার।

জাহাজের সংখ্যার হিসেবে মেঘনা গ্রুপ দ্বিতীয় বৃহৎ কোম্পানি যাদের বহরে জাহাজের সংখ্যা ২২টি। এই খাতে সবচেয়ে বেশি জাহাজ রয়েছে কেএসআরএম গ্রুপের। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় রয়েছে ২৩টি জাহাজ।

মেঘনা গ্রুপের তথ্যমতে, আন্তর্জাতিক সমুদ্র পথে মেঘনা গ্রুপ ২০১০ সাল থেকে জাহাজ পরিচালনায় যুক্ত হয়। মেঘনা গ্রুপ তাদের নিজেদের পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি ভাড়ায় প্রায় ৪০ ভাগ পণ্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য পরিবহন করে।

নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত সমুদ্রগামী দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা ৯১টি। গত তিন বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক জাহাজ দেশীয় বহরে যুক্ত হয়েছে।

বেসরকারি উদ্যোক্তারা যাতে এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয় সেজন্য সরকার ফ্ল্যাগ প্রোটেকশন আইন করেছে। এই আইন শতভাগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে নৌ বাণিজ্য দপ্তর। এই খাতে এখনো বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে, বলেন তিনি।

শিপিং খাতে নতুন বিনিয়োগের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানান তিনি। বর্তমানে বাংলাদেশে আমদানি রপ্তানির প্রায় ২০ ভাগ পণ্য দেশীয় মালিকানাধীন জাহাজের পরিবহন করার সক্ষমতা রয়েছে।

বাংলাদেশি পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা ছিল ৭২টি। ২০১২ সালে এই সংখ্যা নেমে আসে ৩৫ এ। ২০১৮ সালে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬টিতে। বর্তমানে এই সংখ্যা ৯১।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত