স্টাফ রিপোর্টার : পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড পাঁচ বছর ধরে লুট করা হয়েছে। তাই এটাকে রাতারাতি পরিবর্তন করে দেওয়া সম্ভব নয়। আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় দৌড় শুরু করবে এবং আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম শিকদার বলেন, আমানতকারীরা চাইলে তাদের টাকা শেয়ারে কনভার্ট করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই প্রায় ১০০ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। আগামী বছর টাকার পরিমাণ আরও বাড়বে। ২০২৩ সালের মধ্যে এক হাজারের বেশি গ্রাহকের টাকা পুরোপুরিভাবে ফেরত দিতে পারবো। এছাড়া আমরা ৩৪টি বৈঠক করতে সক্ষম হয়েছি। শিগগিরই প্রতিষ্ঠানটি আবার সচল হবে।
তিনি বলেন, বড় বড় ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ছোট-বড় মিলিয়ে এই মামলার সংখ্যা ৩৫০টি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তারা ধীরে ধীরে টাকাও ফেরত দিচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো অনেক ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত নেই। ফলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
আমানতকারীরা বলেন, পিপলস লিজিংয়ের বর্তমান যে অবস্থা এর জন্য শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক দায়ী। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি প্রথম থেকে পিপলস লিজিংসহ অন্যান্য ফিনান্সিয়াল সংস্থাগুলোকে সঠিকভাবে দেখাশোনা করতো তাহলে এই সোনার বাংলাদেশে বর্তমানে যে অর্থনৈতিক মহামারী চলছে তা কিছুতেই হতো না। আমাদেরকেও দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হতো না।
চার বছর হলো আমরা আদালত, প্রধানমন্ত্রীর দরবার, বিভিন্ন দপ্তরে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে একাধিকবার গিয়েছি। আমরা অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছি। এর জন্য দায়ী শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক।
আমানতকারীরা আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন যে, বাংলাদেশে কোনো তারল্য সংকট নেই, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পিপলস লিজিংয়ের বোর্ড যখন লোন চাইলো, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক কেন তা বাতিল করে দিল?
আজ পিপলস লিজিং যদি ঠিকঠাক মত চালু করা হতো এবং এই আমানতকারীদের কোনো কষ্ট না হতো তাহলে বর্তমানে যে অর্থনৈতিক মহামারী শুরু হয়েছে তা হয়তো হতো না। যে মহামারী চলছে তা পিপলস লিজিং থেকে শুরু হয়েছে, তা শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের যথাযথ তদারকির অভাবে।
তারা বলেন, আমাদেরকে কেন করুণভাবে টাকা চাইতে হবে? আমরা তো আমাদের টাকাটা ফেরত চাই। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোনীত এবং রেজিস্ট্রেশনকৃত সফল একটি প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখেছিলাম। যে প্রতিষ্ঠান শেয়ার মার্কেটে বিদ্যমান ছিল এবং একজন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ডিরেক্টর। তাহলে কোনোরকম নিয়মনীতি না মেনে সেই কোম্পানি কিভাবে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যেতে পারে?
আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনে আছে, আমানতকারীদেরকে জানাতে হবে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে। অথচ কোনোরকম বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হয় নাই, এমনকি কোনো চিঠিপত্র দিয়েও জানানো হয় নাই।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর এবং নির্বাহী পরিচালকের নাম ইতিমধ্যে হাইকোর্টে আলোচনা হয়েছে। আদালত কথা বলেছে তাদেরকে নিয়ে, তাহলে কি আদালতের আইন সবার জন্য সমান নয়? আমরা পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারীরা আমাদের কষ্টার্জিত আমানতের টাকাগুলো ফেরত চাচ্ছি, আমরা কোনো ভিক্ষা চাচ্ছি না, কোনো লোন চাচ্ছি না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।