সকল মেনু

দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি উত্তোলনের নিরাপদ ও টেকসই উৎস হবে দেশের পুঁজিবাজার: ডিএসই চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি উত্তোলনের নিরাপদ ও টেকসই উৎস হবে দেশের পুঁজিবাজার৷ সেজন্য আরো স্বচ্ছ ও সুন্দর হওয়া জরুরি আইপিও প্রক্রিয়া।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের  (ডিএসই) ট্রেনিং একাডেমি কর্তৃক ২ দিনব্যাপী আয়োজিত ‘ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিংস (আইপিও): প্রসেসেস অ্যান্ড প্রসিডিউরস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনকালে বুধবার (২৯ নভেম্বর) ডিএসই চেয়ারম্যান  মো. ইউনুসুর রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টের ভিত্তিতে আইপিও নির্ধারিত হয়৷ কাজেই ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্টগুলো যেন অধিকতর স্বচ্ছ হয়, সে বিষয়ে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল কাজ করছে৷

তিনি আরো বলেন, আগামী দিনগুলোতে চার্টার্ড একাউন্টিং ফার্মসমূহ অধিকতর আন্তরিকতার সাথে বিষয়গুলো পরিচালনা করবেন। তখন স্টেটমেন্টগুলোর সঠিকতা নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে- তা দূর হবে।

ডিএসই থেকে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইউনুসুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজার দেশের শিল্প উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হওয়ার কথা থাকলেও সে অবস্থানে যেতে পারছে না। দেশে মূল অর্থায়ন হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংক স্বল্পমেয়াদে আমানত সংগ্রহ করে শিল্প খাতে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ প্রদান করে। -যেকারণে কিছু অমিল লক্ষ্য করা যায়।

তিনি বলেন, আমরা যারা পুঁজিবাজারের সাথে জড়িত, তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের মূল উৎসে পরিণত করা। পুঁজিবাজারকে অর্থনীতির মূল উৎসে রূপান্তরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। আমরাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা প্রদান করছি।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, বিগত নয়-দশ বছরে দেশে শতাধিক কোম্পানির মতো আইপিও এসেছে, এর মধ্যে অনেক কোম্পানির শেয়ারদর বর্তমানে ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে। এক্ষেত্রে যেসব ভুলভান্তি রয়েছে- তা নির্ধারণ করে সংশোধনীমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সমস্যা উত্তরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আপনারা আইপিওর প্রসেস ও প্রসিডিউর সম্পর্কে হাতে কলমে শিখবেন এবং ব্যক্তি জীবনে কাজে লাগাবেন। আপনারা আপনাদের এটিচিউডকে পজিটিভ করলেই দেশ উপকৃত হবে। একইসঙ্গে আমাদের মূল লক্ষ্য অনুযায়ী পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের মূল উৎসে পরিণত করা সম্ভব হবে।

কর্মশালায় ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, আইপিওর প্রসেস, প্রসিডিউর এবং বিধি ও প্রবিধানসমূহ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত আছে। তারপরও এই প্রশিক্ষণের বিশেষত্ব হলো, প্রশিক্ষকদের প্রয়োগিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করার মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদের জ্ঞ্যানভান্ডার সমৃদ্ধ করা৷

সাইফুর রহমান বলেন, তালিকাভুক্ত থাকা বা তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে- এমন কোম্পানিতে যারা কাজ করছেন, তারা এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের কোম্পানির জন্য ভ্যালু অ্যাড করতে পারবেন। তিনি বলেন, প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্বরতরা সবাই আইপিওর কাজের সাথে জড়িত। তাই বিধি প্রবিধান ছাড়াও প্রায়োগিক যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়- তা এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিরসন সম্ভব। পাশাপাশি, কোম্পানিগুলোর যে ধরনের সীমাবদ্ধতা এবং সমর্থন থাকলে এই প্রসেসকে এগিয়ে নেওয়া যায়- তা বোঝা যাবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে অনেক কর্পোরেট হাউজ রয়েছে- যাদের আইপিওর মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের যথেষ্ট সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও শুধু নলেজ গ্যাপ থাকার কারণে সেটা ধীরগতিতে এগুচ্ছে। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নলেজ গ্যাপিংয়ের ঘাটতি পূরণসহ নলেজ লেভেল সমৃদ্ধ হবে। সেইসঙ্গে, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মত-বিনিময়েরও সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন সাইফুর রহমান।

কর্মশালায় পাবলিক অফারিং এর প্রয়োজনীয়তা, আইপিও ব্যবস্থাপনা ইস্যুতে ইস্যু ম্যানেজার/আন্ডাররাইটার/রেজিস্টার এর ভূমিকা, ইলেক্ট্রনিক সাবসক্রিপশন সিস্টেম, আইপিওর আবেদন প্রক্রিয়া ও শেয়ার বরাদ্দ, ডিরেক্ট লিস্টিং এবং পাবলিক অফারের ডকুমেন্ট প্রসপেক্টাসের অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।

ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক ও ডিএসই ট্রেনিং একাডেমির প্রধান সৈয়দ আল আমিন রহমান এবং লঙ্কাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আলমসহ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top