স্টাফ রিপোর্টার: রপ্তানি আয়ের চেয়ে আমদানি ব্যয় বেশি হওয়ায় অর্থবছরের শুরু থেকেই মোটা দাগের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। তার উপর, আগে থেকেই শুরু হওয়া ডলার সঙ্কট দেশের অর্থনীতিতে যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। এমন পরিস্থিতিতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৫৮ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ২ হাজার ৫৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এর বিপরীতে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৫৯১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের। আর, এতে বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে ৯৫৮ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের।
সেবা খাতেও বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে এ সময়। সেবা খাতে অক্টোবর মাসে শেষে দেশে আয় করেছে ২৯৭ কোটি। বিপরীতে, ব্যয় হয়েছে ৪৩৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। -যেকারণে এ খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। -যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৯৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
একই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ঘাটতিও ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫০ কোটি ১০ লাখ ডলার। -যা গত অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ৩৮৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ৪ মাসে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়েছে ৬৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
চলমান এ বছরের শুরু থেকেই দেশে প্রকট আকার ধারণ করেছে ডলার সঙ্কট। বাজার নিয়ন্ত্রণে রিজার্ভ থেকে ডলার ছেড়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর, এতে রিজার্ভ কমছে ধারাবাহিকভাবে।
বর্তমানে দেশে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের আশেপাশে রিজার্ভ রয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়। এ অবস্থার মধ্যেই বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দু’টি খাত- প্রবাসী আয় ও রফতানিতে লেগেছে বড় ধরণের ধাক্কা। তবে, শিগগিরই এসব সমস্যা কেটে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
আবার, দেশে বাণিজ্য ঘাটতির এ সঙ্কটকালে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আগের তুলনায় কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় আশা জাগিয়েছে দেশের অর্থনীতিতে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৭৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বিপরীতে, গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলো ৮৬০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। এতে প্রথম পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৮ কোটি ৪১ লাখ ডলার। একইসঙ্গে, আগের দুই মাসের তুলনায় নভেম্বরেও রেমিট্যান্স কিছুটা বেড়েছে। মাসটিতে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।