সকল মেনু

‘ফরেক্স’ ট্রেড চালু করবে সিএসই

সিনিয়র রিপোর্টার: দেশের পুঁজিবাজারে পণ্য ও সেবায় বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এরই ধরাবাহিকতায় পুঁজিবাজারে নতুন পণ্য হিসেবে ডেরিভেটিভস মার্কেটের আওতায় সম্প্রতি কমোডিটি ডেরিভেটিভসের অনুমোদন ও আইন পাস করা হয়, যা কার্যক্রম শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে। এবার ফরেক্স বা বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। দেশে বৈদেশিক বিনিময় হারের ঝুঁকি কমাতে ‘কারেন্সি ডেরিভেটিভস’ চালু করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি।

নতুন এ মার্কেটপ্লেস চালু হলে পুঁজিবাজারের আকার বাড়বে এবং সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলবে। এছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ ডেরিভেটিভস মার্কেট প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে দেশের সুনাম ও ভাবমূর্তি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বাজার-সংশ্লিষ্টরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক বলেন, ডেরিভেটিভস মার্কেটের তিনটি অংশের একটি আগে থেকে পুঁজিবাজারে রয়েছে। কয়েক দিন আগে দ্বিতীয়টির অনুমোদন পাওয়া গেছে, যা কার্যক্রম শুরুর অপেক্ষায়। এবার তৃতীয়টির জন্য আমরা আবেদন করেছি। কমোডিটি এক্সচেঞ্জে চালু হলে এবং ফাইন্যান্স ডেরিভেটিভস অনুমোদন পেলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে সিএসইতে ফরেক্স ট্রেডিং চালুর ক্ষেত্রে সার্বিক সহাযোগিতা করছে সিএসইর স্ট্রাটেজিক পার্টনার ও দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেড। তারা এ বিষয়ে সিএসইকে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

তবে এ প্ল্যাটফর্ম চালু করার ক্ষেত্রে বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বড় ভূমিকা রয়েছে। বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা পেলে দেশে শিগগির ফরেক্স মার্কেট চালু করা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ও বিনিময় হার নির্ধারণের বাজারকে ফরেক্স বোঝায়। যেখানে ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকগুলো, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ক্রয়, বিক্রয় এবং বিনিময় করতে পারেন। দেশে ডেরিভেটভস মার্কেটের একটি অংশ হিসেবে কারেন্সি ডেরিভেটভসের আওতায় এ ধরনের একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করতে চায় সিএসই।

২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর প্রাথমিকভাবে দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার অনুমতি পায় সিএসই। সে সময় বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠায়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু ও পরিচালনায় এবং পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করার আগে ছয়টি অবকাঠামো সুবিধা এবং সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। অবকাঠামোর মধ্যে পণ্যের গুণমান নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থা রয়েছে। পণ্য গুদামজাতকরণ, সংরক্ষণ ও স্থানান্তরের জন্য নিবন্ধিত গুদাম সুবিধা এবং এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করতে হবে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাজারে অংশগ্রহণকারীদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি, ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করার জন্য উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখতে হবে। এছাড়া মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে পণ্যের যথাযথ তথ্য সংগ্রহ ও সামগ্রিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং কমোডিটি এক্সচেঞ্জ গঠনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত প্রস্তাব দিতে হবে।

এরপর বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে সিএসই গত বছর অক্টোবরে দেশে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর খসড়া বিধিমালা জমা দেয়। খসড়া আইনটি সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম কর্তৃক বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত উল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ইন্টারেক্টিভ প্রতিক্রিয়া এবং সিএসই ও এমসিএক্স কোর টিমের মধ্যে একাধিক ব্রেনস্টর্মিং সেশন এবং সিএসই, বিএসইসি অন্যান্য প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের এবং এমসিএক্স টিমের সাম্প্রতিক অনসাইট ভিজিটের ওপর ভিত্তি করে সামঞ্জস্যপূর্ণ পণ্য ডেরিভেটিভস সেগমেন্ট সংক্রান্ত খসড়া আইন তৈরি করেছে বাংলাদেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য। এমন একটি বাজার তৈরি এবং বিকাশের জন্য খসড়া আইন (দুটি ধাপে বিভক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে) কমিশনের কাছে সদয় পর্যালোচনা এবং প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রত্যাশিতভাবে জমা দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) প্রকল্প পরামর্শক মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়ার (এমসিএক্স) সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর করার ৬ মাসের মধ্যে প্রথম উদ্যোগটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top