স্টাফ রিপোর্টার: আরামিট সিমেন্টের পরিচালনা কর্মদক্ষতা অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তিন সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন- বিএসইসি’র উপপরিচালক মো. মুস্তাফিজুর রহমান, সহকারী পরিচালক মো. শাকিল আহমেদ ও আলী আহসান।
আরামিট সিমেন্টের বিরুদ্ধে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে তদন্ত কমিটিকে নির্দেশ দিয়ে একটি আদেশ জারি করা হয় বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, তদন্ত পরিচালনার বিষয়টি আরামিট সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রতিষ্ঠানটির বিগত ছয় বছরের পরিচালনা কর্মদক্ষতাসহ আর্থিক দুর্বলতা যাচাই করতে বলা হয়েছে গঠিত তদন্ত কমিটিকে।
আরামিট সিমেন্টের ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে পরিচালিত কর্মদক্ষতা অনুসন্ধান করা প্রয়োজন বলে বিএসইসি জারি করা আদেশে উল্লেখ করে। এ আলোকে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং- ১৭) এর ২১ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ১৭-ক ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
আরামিট সিমেন্ট তার সহযোগী কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে ঋণ দেয়ায় বিপাকে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি গত পাঁচ বছরে কোনো সুদ ছাড়াই ৭৭.২১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে ছয় সহযোগী কোম্পানিকে। আর, ঋণের সুদজনিত ব্যয় বহন করছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি। এতে শেয়ারহোল্ডাররা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের প্রত্যাশিত মুনাফা থেকে।
পুঁজিবাজারে ১৯৯8 সালে তালিকাভুক্ত আরামিট সিমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি টানা পাঁচ বছর। তবে, ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঘোষিত নগদ ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশকে চূড়ান্ত লভ্যাংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। এর আগে ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
এ কোম্পানির সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি ১৬.৮৮ টাকা লোকসান হয়েছে। এর বিপরীতে, গত হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ০.৬০ টাকা ছিল।
কোম্পানিটির ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য বা এনএভিপিএস ১২.৫৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
আবার, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর-২০২২) লোকসান বেড়েছে কোম্পানিটির। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২.৬৪ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে এ লোকসান ১.৯৬ টাকা ছিল।
একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে আরামিট সিমেন্টের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য ৯.৯৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি//২০২৩) কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ২৪ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।
সিমেন্ট খাতের এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা। আর, পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভে রয়েছে ২৯ লাখ টাকা।
কোম্পানিটির মোট শেয়ারসংখ্যা ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার। এরমধ্যে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৪৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর রয়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ শেয়ার। বাকি ৪৪ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।