Homeখাতওয়ারী সংবাদক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিপাকে ইউনাইটেড পাওয়ার

ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিপাকে ইউনাইটেড পাওয়ার

সিনিয়র রিপোর্টার: সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিদ্যুৎ, শিল্প ও বাণিজ্য খাতে গ্যাসের দাম বাড়ায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এর মধ্যে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

এ সিদ্ধান্তের কারণে বিপাকে পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিতাভুক্ত বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ইউপিজিডিসিএল)। স্টক এক্সচেঞ্জে এ-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি।

স্টক এক্সচেঞ্জকে দেয়া তথ্যানুসারে, ২০০৭ সালের ৬ মে ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়ারণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) এবং ১৬ মে চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সঙ্গে চুক্তি করে ইউপিজিডিসিএল (তৎকালীন মালঞ্চ হোল্ডিংস লিমিটেড)।

বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি অংশগ্রহণ বাড়ানো-সংক্রান্ত নীতিমালা অনুসারে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ইউপিজিডিসিএলকে স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদক (আইপিপি) হিসেবে লাইসেন্স দেয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের জন্য তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ চুক্তি (জিএসএ) করে কোম্পানিটি।

চুক্তির ৩.৫ ধারা অনুসারে, আইপিপির জন্য প্রযোজ্য হারে সরকার গ্যাসের দাম নির্ধারণ করবে। তবে ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে, ইউপিজিডিসিএলের জন্য নির্ধারিত গ্যাসের দাম আইপিপির জন্য প্রযোজ্য হার থেকে পরিবর্তন করে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রযোজ্য হারে নির্ধারণ করা হয়।

পরবর্তী সময়ে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দাম এমন হারে পরিবর্তন ও বাড়ানো হয় যে বিদ্যুতের বিক্রয়মূল্য কাঁচামালের দামের চেয়ে নিচে নেমে আসে, যা বিদ্যুৎ খাতের নির্মাণ, উৎপাদন, বিতরণ, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ নীতির পরিপন্থী।

এ অবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তির ১১(৪) ধারা অনুসারে, এ বছরের ২৫ জানুয়ারি গ্যাসের দাম পরিবর্তনের এ ঘটনাকে অপ্রত্যাশিত হিসেবে ঘোষণা করে ডিইপিজেড ও সিইপিজেডে অবস্থিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধের জন্য বেপজাকে নোটিস দেয় ইউপিজিডিসিএল।

তবে বেপজা এ নোটিস গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে এর পরদিনই চিঠি পাঠিয়ে কোম্পানিটিকে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির আহ্বান জানায়। বর্তমানে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার বিষয়টি চলমান রয়েছে।

ইউপিজিডিসিএল সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সরকার ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য গ্যাসের বিদ্যমান দাম প্রতি ঘনমিটারে ১৬ থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে। তার ওপর গ্যাসের দামের ওপর বেপজা কর্তৃপক্ষ ১০ শতাংশ সার্ভিস চার্জ নেয়। এতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বাবদ কোম্পানিটির ব্যয় দাঁড়ায় ৩০ টাকায়। সে হিসাবে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস বাবদ ব্যয় হয় ১১ টাকা।

এর সঙ্গে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের খুচরা যন্ত্রাংশ, লুব অয়েল, পরিচালন ব্যয়, অবচয়সহ অন্যান্য ব্যয় বাবদ প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে আরো প্রায় সাড়ে ৩ টাকার মতো খরচ হয়। সব মিলিয়ে বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হচ্ছে ১৪ টাকা ৫০ পয়সা।

অন্যদিকে কোম্পানিটির উৎপাদিত প্রতি ইউনিটের বিক্রয়মূল্য ৯ টাকা ৪৩ পয়সা। উৎপাদনমূল্যের চেয়ে বিক্রয়মূল্য কম হওয়ার কারণে কোম্পানিটির পক্ষে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। বিষয়টির সুরাহা না হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত