সকল মেনু

মিডল্যান্ড ব্যাংকের মালিকানায় অংশ পাচ্ছেন ব্যাংকাররা

স্টাফ রিপোর্টার: মিডল্যান্ড ব্যাংকের কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ৫ কোটি টাকার আইপিও আবেদনের সকল পে-অর্ডার, সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ হাউজে নগদায়ন হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকটির শেয়ার ধারণে আগ্রহী কর্মচারীদের জন্যে শেয়ার বরাদ্দের লক্ষে ইএসএস ডাটাবেজ ডিএসসির মাধ্যমে আপলোড করা হয়েছে।

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো ব্যাংকের মালিকানায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ব্যাংকাররা।মিডল্যান্ড ব্যাংকের কোম্পানি সচিব সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কর্মচারীদের আইপিও কোটার আবেদন সম্পন্ন হয়েছে। এমপ্লয়িজ শেয়ার পারচেস প্ল্যান (ইএসপিপি) এর অধীনে মোট আইপিও শেয়ারের ৭.১৪ শতাংশ ব্যাংকের কর্মচারীদের জন্য অনুমোদন দিয়েছে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

LankaBangla securites single page

এসময় ব্যাংকটির কোম্পানি সচিব খালিদ মোহাম্মদ শরীফ, ব্যাংকের বোর্ড এবং বিএসইসির কতৃর্ক অনুমোদিত ৫ কোটি টাকার শেয়ার সম্পূর্ণভাবে সাবস্ক্রাইব হয়েছে। আমাদের ১৭৩ জন কর্মচারীর কাছ থেকে আমাদের এই ৫০ লাখ শেয়ারের সাবস্ক্রিপশন সম্পন্ন হয়েছে। একটা ভিত্তিহীন গুঞ্জন শুনেছি আমরা, যে ব্যাংকের কর্মচারীরা শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। আসলে বিষয়টি মোটেও এমন নয়। বরং আইপিও অনুমোদনের শর্ত অনুযায়ী ৫ কোটি টাকার কর্মচারীদের বরাদ্দ শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে শেষের দিকে কয়েকজন কর্মচারীকে চাহিদামতো শেয়ার বরাদ্দ দেয়া যায় নি।

তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের কর্মচারীরা ব্যাংকের শেয়ার ধারণ করুক। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা আরও আপন করে নেবেন এবং আরও দায়িত্বের সাথে তারা কাজ করবেন।

গেলো বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া ব্যাংকটির প্রাথমিক গনপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন চলবে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এর মাধ্যমে ৭০ কোটি টাকার পুঁজি সংগ্রহ করবে ব্যাংকটি। ব্যাংক কর্মচারীদের মধ্যে বন্টন করা হবে ৫০ লাখ শেয়ার। বাকি ৬ কোটি ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ার বিক্রি করা হবে যোগ্য বিনিয়োগকারী ও সাধারণ শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) বিধিমালা, ২০১৫ অনুসরণ করে বিতরণ করা হবে শেয়ারগুলো। শেয়ার বিক্রি থেকে অর্জিত আয় আইপিও খরচ মেটানোর পাশাপাশি সরকারি সিকিউরিটিজ ও সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করা হবে।

সাধারন বিনিয়োগকারী এবং অনিবাসী বাংলাদেশীরা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকার শেয়ার কেনার জন্য আবেদন করতে পারবেন । এজন্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এর বাজার মূল্যে যথাক্রমে ন্যূনতম ৫০ হাজার এবং ১ লাখ টাকার শেয়ার থাকতে হবে। আবেদন জমা দিতে ইচ্ছুক প্রত্যেক যোগ্য বিনিয়োগকারী, অনুমোদিত পেনশন তহবিল, স্বীকৃত ভবিষ্যত তহবিল এবং অনুমোদিত গ্র্যাচুইটি তহবিলের জন্য ন্যূনতম ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ওপেন-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য। তালিকাভুক্ত শেয়ারে বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ৩ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, মিডল্যান্ড ব্যাংকের আইপিও প্রসপেক্টাস অনুসারে, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ঋণ এবং অগ্রিমের পরিমাণ ছিল ৪৫,৮৬৭.৪৮ মিলিয়ন টাকা যেখানে মোট আমানত ছিল ৫০,৭৩০.০৪ মিলিয়ন টাকা। ব্যাংকের আইপিওর পরিশোধিত মূলধন ৫.৬৯৬.৭০ মিলিয়ন টাকা থেকে বেড়ে ৬,৩৯৬.৭০ মিলিয়ন টাকায় দাঁড়াবে। ব্যাংকের উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের ৭৮.৬৩ শতাংশ শেয়ার থাকবে আইপিও পরবর্তী সময়ে। এছাড়াও, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ সমাপ্ত বছরের জন্য নন-পারফর্মিং লোন (NPL) এবং মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (CRAR) অনুপাত ছিল যথাক্রমে ৩.১৭% এবং ১৫.৮৭%। অন্যদিকে, মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ লুপ (NAV) দাঁড়িয়েছে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ পর্যন্ত ১৩ টাকা এবং সমাপ্ত বছরের জন্য শেয়ার প্রতি আয় (EPS) ছিল- ০.০ টাকা। এছাড়াও, গত পাঁচ বছরে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি গড় আয় (ইপিএস) হলো ১.০৭ টাকা।

১৯৯৪ সালে কোম্পানি আইনের অধীনে ২০১৩ সালের ২০ মার্চ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসাবে যাত্রা শুরু করে মিডল্যান্ড ব্যাংক। ‘bank for inclusive growth’ স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স পাওয়ার পর সেই বছরের ২০ জুন বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে ব্যাংকটি। ব্যাংকের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রচলিত ব্যাংকিং এবং এর সঙ্গে মিডল্যান্ড ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যবসা। ২০১৯ সালে, ব্যাংকটি ইসলামিক ব্যাংকিং লাইসেন্স পেয়েছে এবং এমডিবি সালাম’ নামে সফলতার সঙ্গে ইসলামী

বর্তমানে, মিডল্যান্ড ব্যাংকে ১১ জন প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার রয়েছেন যারা প্রাক- আইপিও ভিত্তিতে ব্যাংকের প্রায় ৩৮.২০ শতাংশ শেয়ারের মালিক। আর ব্যাংকের সূচনা লগ্ন থেকে সংশ্লিষ্ট রয়েছে- মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ, রিদিশা গ্রুপ, আমতারা গ্রুপ, প্রাণ গ্রুপ, মন্ডল গ্রুপ, হা-মীম গ্রুপ, পপুলার ফার্মা গ্রুপ, করিম গ্রুপ এবং লুসাকা গ্রুপের মতো স্বনামধন্য বাণিজ্যিক প্রাতিষ্ঠানসমূহ। দেশজুড়ে বিস্তৃত ৩৬টি শাখা (এর মধ্যে ১৭টি শহরে এবং ১৯টি গ্রামে), ১৬টি উপশাখা, ৫৭টি এটিএম বুথ, ১০৭টি এজেন্ট ব্যাংকিং সেন্টার এবং ১০টি কালেকশন বুথের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যার মাধ্যমে সারাদেশে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিজেদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দিয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক।

মিডল্যান্ড ব্যাংকের অনুকূলে বিএসইসি ইস্যুকৃত আইপিও সম্মতি পত্রের ১৮ নং ধারা অনুযায়ী, আইপিওর মাধ্যমে নতুন শেয়ারহোল্ডাররা ২০২২ সালের আর্থিক বছরের লভ্যাংশের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন, যা এপ্রিল ২০২৩-এর মধ্যে ঘোষণা করা হবে।

লঙ্কাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড মিডল্যান্ড ব্যাংকের আইপিও ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top