Homeঅর্থনীতি৫ বিলিয়ন ডলারের রিসাইকেলড গার্মেন্টস রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছে বিজিএমইএ

৫ বিলিয়ন ডলারের রিসাইকেলড গার্মেন্টস রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছে বিজিএমইএ

স্টাফ রিপোর্টার: ঝুট কাপড় এবং ব্যবহার হওয়া পোশাক থেকে পুনরায় ইয়ার্ন তৈরির মাধ্যমে ভ্যালু এডেড পোশাক রপ্তানিতে ভালো সম্ভাবনা দেখছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।

সংগঠনটি মনে করছে, বর্তমানে ৫০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ঝুট কাপড় হয়। রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে ভ্যালু এড করে পোশাক রপ্তানি করা হলে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এ সম্ভাবনার কথা বলেন।

এনবিআর আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “বাংলাদেশের সামনে রিসাইকেলড গার্মেন্টস তৈরির হাব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”

“তিনটি মিল রিসাইকেলড ইয়ার্ন তৈরির কাজ শুরু করেছে। আরো কারখানা এতে বিনিয়োগে আসছে। যে সব ঝুট কাপড় নিয়ে মারামারি হয়, কিংবা ল্যান্ডফিল এ গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি করে, তা কমার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কেবল স্থানীয় জুট কাপড়ের ভ্যালু এড করেই ৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় করা সম্ভব।”

এক্ষেত্রে সরকারের কাছে নীতিগত সহায়তা চান তিনি।

সভা শেষে সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “এই ঝুট কাপড় বর্তমানে ল্যান্ডফিলে গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে। আবার খুবই সস্তায় কিংবা বিনামূল্যে স্থানীয় প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে দিতে বাধ্য হন কারখানা মালিকরা। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিক্রি করতে গেলে ভ্যাট দিতে হয়। এই ভ্যাট তুলে দিলে স্থানীয় টেক্সটাইল মিল এতে আরো বিনিয়োগে আসতে উৎসাহিত হবে।”

“শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ অন্যান্য দেশ থেকেও এ ধরণের কাপড় এনে ভ্যালু এড করে রপ্তানি করতে পারবে, যা বাংলাদেশকে এর হাব হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেবে,” যোগ করেন তিনি।

রিসাইকেলড পোশাক রপ্তানির সম্ভাবনার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেন, এই সুবিধা আপনারা নিতে পারেন।

আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে এনবিআর ওই সভার আয়োজন করে।

সভায় আরএমজি ও টেক্সটাইল মালিকদের অপর দুই সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রতিনিধিরা তাদের প্রস্তাব তুলে ধরেন।

সভায় পোশাক খাতের দুই সংগঠন আরএমজি রপ্তানির উৎস কর বিদ্যমান ১ শতাংশ থেকে অর্ধেক কমানো এবং তা পাঁচ বছরের জন্য নির্ধারিত করার প্রস্তাব দেন। একই সঙ্গে রপ্তানিকারকদের বিদ্যমান কর্পোরেট করহার আগামী পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী করার দাবি জানানো হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী ট্যাক্স রেট থাকলে বিনিয়োগ পর্যালোচনা করা সহজ হয়।”

এছাড়া রপ্তানির বিদ্যমান ক্যাশ ইনসেনটিভ এর উপর কর কর্তন না করা, শতভাগ রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়ার শর্ত বাতিল করা, ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানির ক্ষেত্রে স্থানীয় ভ্যাট অফিস থেকে সার্টিফিকেট নেয়ার বিধান বাতিল করা, সোলার ইনভার্টার আমদানিতে ডিউটি-ট্যাক্স প্রত্যাহার করা, এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) এর মেশিনারি ও কেমিক্যাল আমদানির ভ্যাট-ট্যাক্স বাতিল করার দাবি জানানো হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি স্থানীয় ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ২০২৩ সালে অতীতের চেয়েও বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে পোশাক খাতকে।

এর পেছনে মূলত, স্থানীয় গ্যাস বিদ্যুতের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য বাজেটে সহায়তা (এনবিআর এর) চান তিনি।

তিনি বলেন, “পোশাকের রপ্তানিতে ভ্যালুতে প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও গত তিন মাস ধরে ইউনিট/পরিমাণে কমছে। যুক্তরাজ্যের ডাটাও এমন তথ্য দিচ্ছে।”

বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন রিসাইকেলড ফাইবার, ম্যান-মেড ফাইবার সহ সব ধরণের ফাইবার আমদানির ডিউটি-ট্যাক্স প্রত্যাহার করা, রিসাইকেল ফাইবার স্থানীয় টেক্সটাইল মিলের কাছে বিক্রির সময় ভ্যাট প্রত্যাহার করা, ম্যান মেড ফাইবার বা এর কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ১৫% ভ্যাট প্রত্যাহার, স্পেয়ার পার্টস আমদানির বিদ্যমান ট্যাক্স প্রত্যাহার, স্থানীয় বাজার হতে কটন ক্রয়ের ভ্যাট প্রত্যাহার করা এবং কমার্শিয়াল ফেব্রিক আমদানির ক্ষেত্রে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের দাবি জানান।

সভায় বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএর সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম, বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান ছাড়াও এনবিআরের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত