স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর পর উৎপাদনে ফিরছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড (আরএসআরএম)। এর আগে ২০২১ সালের শুরুতে যান্ত্রিক ত্রুটি ও নানা কারণে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
দ্বিতীয় প্রজন্মের কোম্পানি আরএসআরএম বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে ১৯৮৬ সালে। এমএস রড উৎপাদনে নিয়োজিত কোম্পানিটির কারখানা চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী রোডে অবস্থিত। বছরে প্রায় তিন লাখ টন রড উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে এই কারখানার। উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত হাতিরঝিল, উড়াল সড়কসহ বড় বড় প্রকল্পের স্থাপনা নির্মাণে নিয়মিত সরবরাহ হয়েছে আরএসআরএম ব্র্যান্ডের রড।
ব্যবসা পরিচালনায় পণ্যের গুণগত মানের সুনাম থাকায় প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের সর্বোচ্চ পুরস্কার, ডিঅ্যান্ডবি করপোরেট পুরস্কার, ইনস্টিটিউট আব চাটার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ কর্তৃক করপোরেট গভর্ন্যান্স কমপ্লায়েন্সের ওপর ভিত্তি করে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে ব্রোঞ্জসহ বেশকিছু পুরস্কার অর্জন ও স্বীকৃতি লাভ করে।
উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটির উৎপাদন চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। বিএসইসির নানা উদ্যোগে অবশেষে প্রায় আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর কোম্পানিটি ফের উৎপাদনে ফিরছে।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানির পরিচালকরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে প্রয়োজনীয় ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সংগ্রহ করছেন। ইতোমধ্যে পরিচালকরা কিছু ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সরবরাহ করেছেন। যারফলে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়েছে এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রণাংশ সংগ্রহ করে কারখানাটি উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সরবরাহের বিষয়ে কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন জানান, কোম্পানির পরিচালকরা ইতোমধ্যে কিছু ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সরবরাহ করেছেন। যা দিয়ে কারখানাটির বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রণাংস প্রতিস্থাপন করে কারখানাটি উৎপাদনের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এখন কাঁচামালের টাকা পেলেই উৎপাদন শুরু করা হবে।
কখন কারখানাটির উৎপাদন শুরু করা হবে- জবাবে কোম্পানি সচিব বলেন, ‘যেকোনো সময়ই উৎপাদন শুরু হতে পারে।’
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, আরএসআরএম স্টিলের উদ্যোক্তরা ইতোমধ্যে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল ৪০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছেন। এছাড়া, কারখানাটিকে উৎপাদনে ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় মেরামত ও সংস্কার কাজও ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
দীর্ঘ আড়াই বছর পর কোম্পানিটি পুনরায় উৎপাদনে ফিরছে- এমন খবরে কারখানার আশেপাশে বাসিন্দাদের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যারা কারখানাটিতে চাকুরী করতেন, তাদের মনে নতুন করে আশা জাগছে।
এদিকে, শেয়ারবাজারে কোম্পানিটি পুনরায় উৎপাদনে আসার কথা বলাবলি হতে শুরু করেছে। যে কারণে দীর্ঘদিন ১৭ টাকার নিচে ফ্লোর প্রাইসে থাকা আরএসআরএমের শেয়ার নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছে। এতে একদিকে কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে শেয়ারদরও ধীরে ধীরে ইতিবাচক প্রবণতায় অগ্রসর হচ্ছে।
সর্বশেষ বুধবার (০৭ জুন) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০ টাকা ৩০ পয়সায়। লেনদেন হয়েছে ৪ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি শেয়ার। গত ০১ জুন শেয়ারটি ২২ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।