স্টাফ রিপোর্টার: শেয়ারপ্রতি ১০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের শেয়ার হঠাৎ নড়ে উঠেছে। দীর্ঘ দিনের শীতনিদ্রা শেষে ঈদুল আযহার পরে রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দুলে ওঠে। রোববার ৬.২৫ শতাংশ শেয়ারপ্রতি দর বাড়ায় অনেক বিনিয়োগকারীর আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছ।
ডিএসইতে রোববার ৬.২৫ শতাংশ দরে বেড়ে ৬.৮০ টাকায় স্থান নেয়। যদিও দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির শেয়ারের প্রতি কোন আগ্রহ ছিল না।
কোম্পানিটি শতকোটি টাকা ঋণাত্বক থাকায় হাত বদলের গুঞ্জনও চলছিল। তবে রোবার হঠাৎ ৮১ লাখ ৮৫ হাজার ৮০০টি শেয়ার হাতবদলের চিত্রকে নতুন সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন অনেকে। হঠাৎ দরবৃদ্ধির সম্ভাবনা হিসেবে কোম্পানির নতুন করে গুছিয়ে ওঠা ও বাণিজ্যের ধারা প্রসারিত করার চেষ্টাকে শুভদিক হিসেবে দেখছে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ।
কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের কোম্পানি সেক্রেটারি নূর হোসেন টেলিফোনে রোববার বিকালে বলেন, কোম্পানি হাত বদলের খবর আমার কাছে অজানা। খবরের উৎপত্তি স্থল ও কারণ সম্পর্কেও আমি অজ্ঞাত। তবে সব সময় কোম্পানির মুনাফা ভালো হয়না। আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের সেই পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এবং মুনাফা বাড়াতে।
এদিকে, কোম্পানির ৫ বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনিয়মের সন্ধান পেয়েছে। এ নিয়ে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গত মে মাসে গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির অগ্রগতি ও বাণিজ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ঊর্দ্ধতন কর্তপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ জানান।
তবে ‘অনিয়ম হয়েছে’ তা তিনি মানতে নারাজ। যা হয়েছে তা নিয়মের ভেতর দিয়েই নিরিক্ষক করেছে বলে জানান নূর হোসেন।
১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রসাধনী কোম্পানিটিতে নতুন করে বিভিন্ন পদে কর্মী নিয়োগ চলছে। ‘হালাল সাবান’ দিয়ে সাড়া জাগানো কোম্পানির হারিয়ে যাওয়া বাজার দখলে নতুন করে পরিকল্পণা গ্রহণ করা হয়েছে জনিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের সর্বশেষ পাঁচ বছরের আর্থিক বিবরণী ফের পর্যালোচনা করতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে বিএসইসির যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম-নীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে এবং কয়েক বছর ধরে কমিশনের কোনো প্রশ্নের জবাবও দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করে বিএসইসি।
তথ্যানুসন্ধানে বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. কাওসার আলীকে আহ্বায়ক এবং উপ-পরিচালক মাওদুদ মোমেন, মো. রফিকুন্নবী ও সহকারী পরিচালক মো. সাকিল আহমেদকে সদস্য করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি কেয়া কসমেটিকসের একীভূতকরণ প্রকল্পটিও পরীক্ষা করবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) অনুসারে, ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত কোম্পানিটির ঋণ রয়েছে ১ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। বর্তমানে কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ১১০ কোটি ২৩ লাখ ১৭ হাজার ৩২৫টি। এরমধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৪৬.২৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৮.২৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৫.৪৮ শতাংশ শেয়ার।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।