সকল মেনু

ডিএসইএক্স কারেকশন হলেও পতনের কোন আশঙ্কা নেই

দেশজুড়ে রাজনীতির উত্তাল হওয়া বইছে। এমন দিনগুলোতে পুঁজিবাজারে বিশেষ প্রভাব পড়ছে না। উত্তাল দিলেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন গত মঙ্গলবার হাজার কোটি ছাড়িয়েছে। যদিও ‘এশিয়া মহাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের মানি মার্কেটের মিল’ নেই। তবুও খুব সংবেদনশীল মার্কেটের এই সময়ে ‘খুব বড় ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে না’ বা আশঙ্কার কোন কারণ নেই -বলেছেন রাসেল কবির

একাধারে তিনি একজন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারী। বর্তমানে তিনি হযরত শাহ আমানত সিউিরিটেজের হেড অব ট্রেড এন্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।

রাজধানীর মতিঝিলে মঙ্গলবার দুপুরে একান্ত সাক্ষাৎকারে রাজনীতির উত্তাল দিনে তুলে ধরেন পুঁজিবাজারের আগাম চিত্র। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- শাহীনুর ইসলাম

  • রাজনীতিক উত্তাল দিনগুলো নিয়ে পুঁজিবাজারে বিশেষ কিছু জানতে চাই
  • রাসেল কবির: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ডিএসইএক্স ৬৩৭৬ লেবেলে (মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত) একটি রেজিটেন্স রয়েছে, যা এই মুহূর্তে খুব বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না। যদিও ইতোমধ্যে ডিএসইএক্স- এর কারেকশন হয়েছে। তবে ছোট-খাট কারেকশনের আরো একটু সম্ভাবনা রয়েছে, তবে বড় কিছু নয়। যা প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে।

সেক্টরাল মুভমেন্ট হিসেবে ছোট প্রাইসের শেয়ারগুলির দাম বাড়ছে। লো-পেইডআপ ক্যাপিটালের শেয়ার ফুওয়াং ফুডসসহ আরো অনেক কোম্পানির শেয়ারদর এখন তুঙ্গে। সেক্টরাল হিসাবে যা বোঝা যাচ্ছে, ছোট প্রাইসের শেয়ারগুলোর মধ্যে কিছু সিলেকটিভ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেসব কোম্পানি লভ্যাংশ দিয়েছে।

  • আগামী সপ্তাহ বা দিনগুলোতে লেনদেন কোন সেক্টরমূখী হচ্ছে?
  • রাসেল কবির: আইটি সেক্টরের মুভমেন্ট বাকি রয়েছে এবং ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে নিচে পড়ে আছে। সিলকো ফার্মা, এডভেন্ট ফার্মা, আইবিপি- এগুলো অনেক কমপ্রাইসের শেয়ার। স্কয়ার ফার্মা, অপসোসিনন বড় প্রাইসের শেয়ার। কম প্রাইসের শেয়ারগুলোর প্রতি এই মুহূর্তে আগ্রহ বেশি।

আগামী সপ্তাহে আইটি সেক্টর ভালো করার আভাস দিচ্ছে। জেনারেল ইন্সুরেন্সগুলোতেও সেই বাতাস লাগার আভাস মিলেছে। আর উত্থানের পেছনের কারণ হিসেবে মাসখানের আগে একটি কারেকশন হয়েছে, করেকশনের পরে মানুষের আগ্রহ তৈরি হয়। তারা অনেকে টেকনিক্যালি ভিউতে হিসাব করেন।

  • টেকনিক্যাল ভিউ কি বলছে
  • রাসেল কবির: ‘ফিবো রেশিও’ -তে একটি কোম্পিানির শেয়ার যদি ৫০ থেকে ৬১ শতাংশ কারেকশন হয়, এরপরে সেই শেয়ার আপার মুভমেন্টে আসে। আইটি সেক্টর এবং ফার্মা সেক্টরের ছোট শেয়ারগুলো ইতোমধ্যে ‘ফিবো রেশিও’তে ৬১ পারসেন্ট কারেকশন হয়েছে। যে কারণে সেক্টর মুভমেন্টের সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
  • কোন শ্রেণির বিনিয়োগকারী এখন আসছে?
  • রাসেল কবির: এখন শিক্ষিত বিনিয়োগকারীর সংখ্যা অনেক। ২০১০ সালের সেই স্বশিক্ষিত বিনিয়োগকারী আর নেই। এখন পোড় খাওয়া সব বিনিয়োগকারী। এখন শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা মার্কেট বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহী। এখন যারা আসছেন তারা শিখে আসছেন, তারা বিজনেস করছেন। যাদের অনেকে টেকনিক্যাল ভিউ থেকে আমার সঙ্গে কথা বলেন।
  • টেকনিক্যাল বিষয়ে কোম্পানি বাছাই ক্ষেত্রে প্রথমে কোম্পানির ফান্ডমেটাল না অন্যকিছু গুরুত্ব পাবে?
  • রাসেল কবির: টেকনিক্যাল বিষয়ে প্রথমে টাইম সাইকেলটাকে আমি গুরুত্ব দেব, যদিও এর সঙ্গে আরো অনেক বিষয় জড়িত আছে। এখানে সাইক্লোজিক্যাল বিষয়ও জড়িত। তবে শেয়ার কেনার আগে কোম্পানির পেছনের ইতিহাস জানা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত কোম্পানির ডিভিডেন্ড পলিসি, কারা ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে। যেমন আসছে সেপ্টেম্বর মাস; এই সময়ে শেয়ার দরের ভালো ফ্লো আসে।

কোম্পানির ডিভিডেন্ড আপনি টেক করেন বা না নাই করেন- দরের বিষয়টি মাথায় নিতে হবে।এই সাইক্লোজি যদি কাজ করে- ১০ থেকে দশ হাজার জনে উপকৃত হবে। শেয়ারবাজারে ঝুঁকি সব সময়ে থাকবে, তবে টেকক্যিাল অ্যানালাইসেস জানা থাকলে সেই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব। আমি বেসিক অ্যানালাইসেসকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি, ফান্ডামেটাল অ্যানালাইসেসের বিষয়ে এখন যাচ্ছি না। সবই জানা দরকার, তবে আমি এই মুহূর্তে অ্যাডভান্স লেভেলকে বেশি গুরুত্বেও সঙ্গে দেখছি।

  • বেসিক অ্যানালাইসেসে কোন বিষয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন?
  • রাসেল কবির: বেসিক অ্যানালাইসেসে অভার হিটেট প্রাইস সম্পর্কে আগে জানা দারকার। অনেক কোম্পানি ফান্ডামেটালি অনেক স্ট্রং তবুও নিচে পড়ে আছে। ডেভিডেন্ট তারা দিচ্ছে কিন্তু প্রাইস অনুযায়ী আমার পছন্দের নয়। গুরুত্বে বিষয় হলো- অভার হিটেড কি না? প্রাইস আমার চিন্তায় রাখতে হবে।

অভার হিটেড কি না- সামনে সেনসেটিভ কিছু আছে কী-না, তাদের ইপিএস কেমন। দেয়ার সম্ভাবনা কেমন? ফান্ডমেটাল শুধু নয়, শেয়ার সংখ্যাও জানা খুবই জরুরি। লাফার্জ, কেয়া কসমেটিকস বা এনবিএল কোম্পানির শেয়ার আমি কিনব না। কারণ কোম্পানিগুলোর বিপুল পরিমাণ শেয়ার- কোন ভাইভ আসবে না। বর্তমানে ডিএসইতে লেনদেন হাজার কোটি টাকা।

এই মুহূর্তে এই কোম্পানির শেয়ারগুলোর প্রাইস উপরে ওঠার মতো মার্কেটের সক্ষমতা আছে কী-না ভাবা দরকার। এ কারণে ‘বাল্কি শেয়ার’ -এর পক্ষে নই।গোটা এশিয়া মহাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের মানি মার্কেটের মিল পাবেন না।

বাংলাদেশের মার্কেট খুব সংবেদনশীল, সেনসেটিভ। তাই সতর্ক হয়েই বিনিয়োগ করতে হবে, মুনাফাও তুলে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে- কেনার সময় যদি মুনাফা করতে পারেন বিক্রির সময়ও পারবেন।

  • সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
  • রাসেল কবির: আপনাকেও ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top