সকল মেনু

কৃষিতে জাপানি বিনিয়োগ, আলোচনায় মিনোরীর মিয়া মামুন

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের কৃষিখাতে জাপানি প্রযুক্তি শেয়ারের মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য মানসম্মত করতে কাজ করে যাচ্ছে মিনোরী বাংলাদেশ লিমিটেড। এরই অংশ হিসেবে জাপানিজ প্রতিনিধি দল সম্প্রতি দ্বীপজেলা ভোলা সফর করেছে।

তারা কৃষকদের উৎপাদিত ভুট্টা, মুগ, মসুর, ধান, সয়াবিনসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য জাপানে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে, কৃষি খাতে বিনিয়োগের কথাও জানান জাপানিজ শিল্পোদ্যোক্তারা।

এ বিষয়ে তারা ভোলার কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। আর এ সবের সমন্বয় করেন জাপান-বাংলাদেশ জয়েন্টভেঞ্চার কোম্পানি মিনোরী বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন।

দেশের বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এরআগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের শেয়ারবাজারের প্রসার ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে জাপানে রোড শো অনুষ্ঠিত হয়েছিল চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল।

জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত সেই রোড শোর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজার ও কৃষিতে বিনিয়োগ আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে জাপানের বেশ কিছু বিনিয়োগকারী মিনোরী বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুনের হাত ধরে বাংলাদেশে এসেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাপানের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান কামেদা সেইকা কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান ড. লেক রাজ জুনেজা মিনোরী বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশে সফর করেছেন।

জাপানিজ এ ব্যবসায়ী সাত দিনের সফরের অংশ হিসেবে জাপান-বাংলাদেশ এডুকেশন স্কিল ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (জেবিইএসডি) স্কুল উদ্বোধন করেন। এসময় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান মিয়া মামুন ঘোষণা করেন, বছরে অন্তত দুইহাজার শিক্ষার্থীকে ভাষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাপান পাঠাবেন।

সে সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড একচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম। পরে মিয়া মামুনের সঙ্গে দ্বীপ জেলা ভোলা সফর করেন তিনি।

সেখানে স্থানীয় বেসরকারি একটি এনজিওর সঙ্গে কৃষিতে যৌথভাবে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি ভোলায় কৃষকদের মাঝে জাপানি টেকনোলজি শেয়ার করার আশ্বাস প্রদান করেন। পাশাপাশি এখানকার উৎপাদিত পণ্য জাপানে রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

পরে মিনোরী বাংলাদেশের মালিকাধীন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমারাল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেড পরিদর্শন করেন। এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগেরও আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে মিনোরী বাংলাদেশের কর্ণধার মিয়া মামুন বলেন, বিদেশের মাটিতে পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করে নিজ দেশে বিনিয়োগ করেছি। অন্যরা দেশ থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। আমি দেশকে দেয়ার জন্য এসেছি। আমি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানিসহ ১০টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। এগুলোতে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশের বাজারে প্রতিবন্ধকতা দূর হলে জাপানিজ আরও বিনিয়োগ বাংলাদেশ আসবে।

তিনি জামালপুরের ইকোনোমিক জোনে একটি রাইস ব্রান অয়েল (ধানের কুঁড়া থেকে উৎপাদিত তেল) ফ্যাক্টরি তৈরির কথা জানিয়ে বলেন, আমরা যদি দেশেই তেল উৎপাদন করতে পারি তাহলে ভোজ্যতেল আমদানি কমে যাবে। পাশাপাশি আমরা বিদেশে তেল রপ্তানি করতে পারব। এ সময় তিনি ধানের তুষ থেকে পরিবেশ বান্ধব তৈষজপত্র তৈরি করার ঘোষণা দেন।

মিয়া মামুন বলেন, এ ধরনের একটি ফ্যাক্টরি বাংলাদেশে চালু করতে পারলে মেলামাইনের ওপর থেকে নির্ভরতা কমবে। আমাদের এ প্রোডাক্টটি হবে পরিবেশবান্ধব। মাটির নিচে তিন সপ্তাহ রাখলে এটি মাটি হয়ে যাবে। যেহেতু এর কাঁচামাল হিসেবে আমি তুষ ব্যবহার করব। বাংলাদেশে আরও কিছু ফ্যাক্টরির স্বপ্ন দেখছেন তরুণ এ উদ্যোক্তা।

তিনি বলেন, এসব বাই-প্রোডাক্ট কাজে লাগালে স্বাভাবিকভাবে চালের দাম বেশি হবে। তাহলে কৃষকরা তুলনামূলকভাবে ৫-১০ টাকা চালের দাম বেশি পাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top