Homeখাতওয়ারী সংবাদরুগ্ন ৪২ কোম্পানি, আরো দুই ডজন নিয়ে আসছে সিদ্ধান্ত

রুগ্ন ৪২ কোম্পানি, আরো দুই ডজন নিয়ে আসছে সিদ্ধান্ত

সিনিয়র রিপোর্টার: টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের উৎপাদন কার্যক্রম গত জুনের শেষে শুরু হয়েছে। কোম্পানিটি ২০১৯ সালের পর টানা তিন বছর নগদ লভ্যাংশ দিতে পারেনি।

তারপরও এর শেয়ার ‘এ’ ক্যাটেগরি হিসেবে কেনাবেচা হচ্ছে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির ২০২০ সালে জারি করা এক আদেশ অনুযায়ী এমন কোম্পানির ক্যাটেগরি ‘জেড’ হওয়ার কথা।

তিন বছর আগের কমিশনের আদেশে বলা হয়েছিল, কোনো কোম্পানি পরপর দুই বছর নগদ লভ্যাংশ প্রদানে বা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এজিএম অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হলে বা পরপর দুই বছর নেট ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক হলে বা নিট পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ পরিশোধিত মূলধনকে অতিক্রম করলে বা বিএমআরই ছাড়া কোনো কোম্পানির ব্যবসায়িক বা উৎপাদন কার্যক্রম টানা ছয় মাস বন্ধ থাকলে ওই কোম্পানি জেড ক্যাটেগরিভুক্ত হবে।

শুধু সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল নয়, আদেশ অনুযায়ী দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে দুই ডজনের বেশি কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটেগরির শেয়ার হিসেবে কেনাবেচা হওয়ার কথা। অথচ এখনও এসব শেয়ার ‘এ’ বা ‘বি’ ক্যাটেগরি হিসেবে কেনাবেচা হচ্ছে।

সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি না হলেও স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ নিয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে জেড ক্যাটেগরিতে অবনমনে স্টক এক্সচেঞ্জের ক্ষমতা স্থগিত করেছিল বিএসইসি, যা এখনও প্রত্যাহার করেনি। এর কারণে বাজারে অসাম্য তৈরি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সিভিওর মতো আরও কিছু কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটেগরিতে নামার কথা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরা ফাইন্যান্স, বিচ হ্যাচারি, সেন্ট্রাল ফার্মা, ডেল্টা স্পিনার্স, এফএএস ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ, প্রিমিয়ার লিজিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, রূপালী ব্যাংক, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, জাহীন স্পিনিং, জাহিনটেক্স এবং ইয়াকিন পলিমার।

কোনো শেয়ারের মার্কেট ক্যাটেগরি ‘এ’ বা ‘বি’ হলে ওই শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তি কেনার দিন থেকে তিন দিনে সম্পন্ন হয়। অন্যদিকে ‘জেড’ ক্যাটেগরিভুক্ত শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় পাঁচ দিনে।

বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা জানান, নিয়ম কার্যকর না করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জ এসব শেয়ার নিয়ে মূল্য কারসাজি করার সুযোগ করে দিচ্ছে।

জানা গেছে, ইয়াকিন পলিমার নামক কোম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রম বহু দিন ধরে বন্ধ। ২০২০ সালে এ কোম্পানি নামমাত্র ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। এরপর দুই বছর আর কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। তারপরও এটি ‘বি’ ক্যাটেগরির শেয়ার হিসেবে কেনাবেচা হচ্ছে। গত মে মাসের শুরুতে এর দর ১৬ টাকা ছিল, যা আড়াই মাস পর দ্বিগুণ হয়েছে। একটি চক্র এ শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে ভালো পয়সা বাগিয়ে নিয়েছে। এর ভুক্তভোগী হচ্ছেন অসচেতন ও ক্ষেত্রবিশেষে লোভী ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে রুগ্‌ণ এবং ব্যবসা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে আদৌ সক্ষমতা নিয়ে সংশয় রয়েছে– এমন ৪২ কোম্পানিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। চাইলে এসব কোম্পানির উদ্যোক্তারা বিএসইসি ঘোষিত ‘এক্সিট প্ল্যান’ অনুযায়ী সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার কিনে কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করতে পারে।

তাদের নানাভাবে এ বার্তা দেওয়া হয়েছে। এ বার্তা গ্রহণ না করা ১৪টি কোম্পানির বিষয়ে সরেজমিন অবস্থা যাচাই করতে চায় ডিএসই। বিএসইসি এ বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে।

কোম্পানিগুলো হলো– ফরচুন সুজ, ন্যাশনাল ফিড মিলস, সেন্ট্রাল ফার্মা, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, দুলামিয়া কটন, ফ্যামিলিটেক্স, নর্দার্ন জুট, কেয়া কসমেটিকস, খান ব্রাদার্স পিপি, রিজেন্ট টেক্সটাইল, ঢাকা ডায়িং, উসমানিয়া গ্লাস, জাহীন স্পিনিং এবং জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। এর মধ্যে ১০ কোম্পানি ‘এ’ বা ‘বি’ ক্যাটেগরিভুক্ত।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত