তৃতীয় দফায় আরো ছয় কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারদরের সর্বনিম্ন সীমা) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর মধ্যে তিন কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বুধবার থেকেই প্রত্যাহার হয়েছে। আর বাকি তিন কোম্পানির ক্ষেত্রে রেকর্ড ডেটের পর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার হবে। বিএসইসির পক্ষ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, ফ্লোর প্রাইস ও অন্যান্য সিদ্ধান্ত আরোপসংক্রান্ত কমিশনের ২০২২ সালের ২৮ জুলাই জারি করা আদেশের কার্যকারিতা ছয় কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসআরএম লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক, খুলনা পাওয়ার, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজিবাজার পাওয়ারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এছাড়া বিএটিবিসি, গ্রামীণফোন ও রবি আজিয়াটার ক্ষেত্রে আসন্ন রেকর্ড ডেট পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইস কার্যকর থাকবে।
ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্নসীমার বিষয়ে ২০২১ সালের ১৭ জুন জারি করা কমিশনের আদেশ কার্যকর হবে বিএসইসির নতুন আদেশে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে শেয়ারদর ২০০ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে সার্কিট ব্রেকার প্রযোজ্য হবে। শেয়ারদর ২০০ টাকার ওপর হলে এবং ৫০০ টাকা পর্যন্ত ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার থাকবে।
৫০০ টাকার বেশি এবং ১ হাজার টাকা পর্যন্ত শেয়ারদর থাকলে সেক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। শেয়ারদর ১ হাজার টাকার বেশি এবং ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হবে। শেয়ারদর ২ হাজার টাকার ওপরে থাকলে এবং ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সার্কিট ব্রেকার হবে ৫ শতাংশ। শেয়ারদর ৫ হাজার টাকার বেশি হলে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হবে। পাশাপাশি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নতুন সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রেও স্ল্যাবভিত্তিক এ সার্কিট ব্রেকার প্রযোজ্য হবে।
প্রসঙ্গত, দেশের পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস যুগের শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চে। কভিড সংক্রমণের প্রভাবে পুঁজিবাজারে দরপতন তীব্র হয়ে উঠলে তা ঠেকাতে সে বছরের ১৯ মার্চ ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। এক বছরেরও বেশি সময় পর ২০২১ সালের ১৭ জুন ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়।
তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশের অর্থনীতিতে অস্থিরতা শুরু হলে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। এর পাঁচ মাসের মাথায় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ১৬৯টি কোম্পানির ক্ষেত্রে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়। যদিও এ কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কমতে শুরু করলে দুই মাস পরই গত বছরের ১ মার্চ আবারো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়, যা গত ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল ছিল।
এদিন ৩৫টি কোম্পানির ওপর বহাল রেখে বাকি সব কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। পরে গত ২২ জানুয়ারি ২৩টির ওপর থেকে প্রত্যাহার করে ১২টি কোম্পানির ওপর ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখা হয়। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পরই পুঁজিবাজারে গতি ফিরতে শুরু করেছে। তিন কার্যদিবস ধরেই দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে পুঁজিবাজারে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।