কারিগরি ত্রুটির কারণ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে গঠিত তদন্ত কমিটি ডিএসইর আইটি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নাসডাক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
রোববার (১০ মার্চ) ডিএসইর প্রকাশনা বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিনিয়োগকারী তথা পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, অপারেশনাল ত্রুটিজনিত কারণে ডিএসইর সূচকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অস্বাভাবিক পরিসংখ্যান লক্ষ্য করা যায়। এ বিষয়ে ডিএসই ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নাসডাকের সাথে জরুরি বৈঠক করে তা সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ডিএসই প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) এ.জি.এম. সাত্বিক আহমেদ শাহকে প্রধান করে ৩ সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ডিএসই কর্তৃপক্ষ আশা করছে আজকের মধ্যেই উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করা যাবে। এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে এবং এই অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার জন্য ডিএসই দুঃখ প্রকাশ করছে৷
এদিকে রোববার (১০ মার্চ) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের শুরুতেই ডিএসইর ওয়েবসাইটে এই বিভ্রান্তি দেখা দেয়। লেনদেন শুরুর পর থেকে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত ডিএসইর ওয়েবসাইটিতে সূচক সংক্রান্ত বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখায়। ফলে পুঁজিবাজারের প্রকৃত অবস্থা জানতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিনিয়োগকারীরা।
এদিন সকাল ১০টায় স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরু হয়। তখন থেকেই ওয়েবসাইটে ভুল তথ্য দেখানো শুরু হয়। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্য অনুসারে, ডিএসই ইনডেক্স ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬ হাজার ১২.৩৬ পয়েন্ট বা ৯৯.৯৯ শতাংশ কমে ০.৩৯ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। অথচ তখন পর্যন্ত বাজারে ২২৬টি কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার মধ্যে ১৫৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, যা লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর ৭০.৩২ শতাংশ।
আলোচিত সময়ে শরীয়া সূচক ডিএসইএসের অবস্থান দেখানো হয় ০.০৪ পয়েন্ট, যা আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৩৩৫.৮৪ পয়েন্ট বা ৯৯.৯৯ শতাংশ কম। অন্যদিকে বাজার মূলধনের দিক থেকে বৃহৎ ৩০ কোম্পানির মূল্যসূচক ডিএস৩০ এর অবস্থান দেখানো হয় ২ হাজার ৯৬.৫৭ পয়েন্ট, যা আগের দিনের চেয়ে ২.২৩ পয়েন্ট বা ০.১০৬ শতাংশ বেশি। তবে বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ ওয়েবসাইটে মুল্যসূচক তিনটির সব তথ্য দেখানো হয় শূন্য। এদিকে সূচকের গ্রাফেও কোনো তথ্য ছিল না বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত।
এদিকে দুপুর আড়াইটার পর লেনদেন শেষে ডিএসইর ওয়েবসাইটে ডিএসইএক্স সূচক ১৪১ পয়েন্ট বাড়ছে বলে দেখানো হয়। কিন্তু মূল সূচক ছিল ঋণাত্মক ৫ হাজার ৯৭১ পয়েন্ট, যা পুরোপুরি বিভ্রান্তমূলক তথ্য। একইভাবে শরীয়া ডিএসইএস সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। কিন্তু মূল সূচক ছিল ঋণাত্মক ১ হাজার ৩৪০ পয়েন্ট, এটাও পুরোপুরি বিভ্রান্তমূলক তথ্য। পাশাপাশি ডিএস৩০ সূচকও ২০৮৩ পয়েন্ট বেড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। কিন্তু মূল সূচক ছিল ঋণাত্মক ১০পয়েন্ট, এটাও পুরোপুরি বিভ্রান্তমূলক তথ্য।
এদিকে সকাল ১০টা ২৪ মিনিটে ডিএসইর ওয়েবসাইটে এক বার্তায় জানানো হয়, অপারেশনগত ত্রুটির কারণে ডিএসইর ওয়েবসাইটে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখাচ্ছে। এ জন্য সূচক দেখে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। তবে ঘণ্টাখানেক পর ওই বার্তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।