সকল মেনু

বেক্সিমকো গ্রুপের অনুসন্ধান শুরু, ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা পাচার

বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এক হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে সিআইডির ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ–বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো।

সিআইডির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা আছে, বেক্সিমকো গ্রুপ বিগত ১৫ বছরে সাতটি ব্যাংক থেকে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে।

বেক্সিমকো গ্রুপ জনতা ব্যাংক থেকে ২১ হাজার ৬৮১ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ২১৮ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ২৯৫ কোটি, সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ৬৭১ কোটি ও এবি ব্যাংক থেকে ৬০৫ কোটি টাকাসহ মোট ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এ ছাড়া বেক্সিমকো গ্রুপ গত কয়েক বছরে বাজার থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা প্রতারণা ও জাল–জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে।

সৌদি আরবে যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের বেশিরভাগ অর্থ বাংলাদেশ থেকে ওভার ইনভয়েসিং, আন্ডার ইনভয়েসিং ও হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেক্সিমকো গ্রুপ এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে মানিলন্ডারিং আইন ও বিধি অনুযায়ী অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এক হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে সিআইডির ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইডির ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আর্থিকখাতে অনিয়ম অনুসন্ধানের বিষয়ে সম্প্রতি সিআইডির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিগত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমেকো কোম্পানির অর্থ পাচারের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। পরে সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুসন্ধানের অনুমোদন দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বেক্সিমকো গ্রুপ গত ১৫ বছরে সাতটি ব্যাংক থেকে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে জনতা ব্যাংক থেকে ২৯টি প্রতিষ্ঠানের নামে ২১ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংক থেকে পাঁচ হাজার ২১৮ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ২৯৫ কোটি টাকা, সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে সম্মিলিতভাবে পাঁচ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা ও এবি ব্যাংক থেকে ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এসব টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

আরও বলা হয়, বিগত কয়েক বছরের দৃশ্যমানভাবে বাজার থেকে ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং অদৃশ্যভাবে ২০ হাজার কোটি টাকা প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বাজার থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top