সকল মেনু

রিজার্ভ নিয়েও পলাতক গভর্নরের ভয়াবহ জালিয়াতি

আওয়ামী সরকারের আর্থিক সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। সেই প্রতিষ্ঠানকে অনৈতিকভাবে সহায়তা করেছেন সাবেক ও পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এস আলমের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকা ৭টি ব্যাংককে টাকা পাচার ও নীতিহীনভাবে অভিনব পন্থা বেছে নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।

ইসলামী ব্যাংক থেকে তিন দফায় ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ডলারের ভুয়া ক্রয় দেখিয়ে ১২ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তারল্য সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংককে অবৈধ সুবিধা দিতে এ অভিনব পন্থা বেছে নেয়া হয়।

সর্বশেষ গত ৩ জুলাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার ক্রয় দেখিয়ে ৬ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এভাবে একদিকে জালিয়াতি করে টাকা দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে ভুয়া হিসাবসহ রিজার্ভ বেশি দেখানো হয়েছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জালিয়াতির এ তথ্য সামনে এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার পতনের আগে নজিরবিহীনভাবে এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলোর বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পরিচালিত চলতি হিসাবে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি রেখে লেনদেনের সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার সুযোগ অবারিত রাখা হয়। তবে ব্যাংকগুলোতে ঋণ দেওয়ার মতো তহবিল ছিল না। এ অবস্থায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডলারের ভুয়া লেনদেন করে অভিনব কায়দায় টাকা দেওয়া শুরু হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ গত ৩ জুলাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ৫৫০ মিলিয়ন ডলারের ভুয়া ক্রয় দেখানো হয়। প্রতি ডলার ১১৮ টাকা হারে ইসলামী ব্যাংককে ওই দিন বাংলাদেশ ব্যাংক ৬ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা পরিশোধ করে। কয়েক দফা তাগিদের পর বিপরীতে ১০০ মিলিয়ন ডলার দেয় ইসলামী ব্যাংক।

তবে দীর্ঘদিন ধরে বাকি ৪৫০ মিলিয়ন ডলার আর দেওয়া হয়নি। আবার এর বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে টাকা নিয়েছে, তাও ফেরত দেয়নি। সরকার পতনের পর গত ১১ আগস্ট রোববার তড়িঘড়ি করে সেই টাকা আদায় করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যে কারণে ইসলামী ব্যাংকের চলতি হিসাবে আবার বড় অঙ্কের ঘাটতি তৈরি হয়।

ভুয়াভাবে কেনা ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভে দেখানো হলেও নিট রিজার্ভে দেখানো হয়নি। এর ফলে গত জুলাই শেষে গ্রস রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন এবং নিট রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। গত ২৮ আগস্ট গ্রস রিজার্ভ কমে ২৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়নে নামে। অথচ নিট রিজার্ভ বেড়ে ২০ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top