২০১৬ সালে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৮২ শতাংশ শেয়ার অবরুদ্ধ রেখেছে পরিবর্তিত অন্তর্র্বতী সরকার। একই সঙ্গে বিকর্তিত সেই এস আলমের নিয়ন্ত্রিত মোট ৮টি ব্যাংকের শেয়ার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সরকার। ব্যাংকগুলোর বেশিরভাগ শেয়ার এখন সরকার সংরক্ষিত হওয়ায় অল্প সংখ্যক শেয়ার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিময়যোগ্য।
যার কারণে মুনাফার লোভে বিনিয়োগ চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ৮ ব্যাংকের শেয়ার। তবে বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্যাংকখাত ছিল লেনদেনের শীর্ষে।
তার মধ্যে টপটেন গেইনারে ছিল এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা চারটি ব্যাংক। সেগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। দাওে মধ্যে দরবৃদ্ধির শার্ষে ছিল ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।
এস আলম (সাইফুল আলম) পরিবার ও তাদের নামে-বেনামে কেনা শেয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে রয়েছে। তবে পুঁজিবাজারে লেনদেনযোগ্য শেয়ারের পরিমাণ মাত্র ১৮ শতাংশ। ব্যাংকটির মোট শেয়ারের পরিমাণ ১,৬০৯,৯৯০,৬৬৮টি হলেও লেনদেনযোগ্য অনেক শেয়ার।
এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৮ ব্যাংকের সব শেয়ার অবরুদ্ধ করেছে সরকার। যার ফলে প্রত্যেকটি ব্যাংকের শেয়ার দরে বিনিয়োগ চাহিদায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে ছিল ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এসআইবিএল, ইউনিয়ন ব্যাংক, জিআইবি, স্টান্ডার্ড ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। তবে দিন শেষে চারটি ব্যাংক টপ টেনের গেইনারে অবস্থান নেয়।
ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর গত দেড় মাসে ২০১৬ সালের পরে অর্থাৎ ৭ বছরের সর্বোচ্চ দরে পৌছায়। অল্প সময়ে শেয়ারের দাম দ্বিগুণের বেশি। তবে গত বুধবার ডিএসইর অনুসন্ধানের খবর প্রকাশ হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে ৭১ টাকায় লেনদেন শুরু হয় এবং দুপুরে তা ৬৬ টাকায় নেমে আসে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষকে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
৬ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে। ৬ আগস্ট থেকে বুধবার পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম প্রায় ৩৮ টাকা বা ১১৬ শতাংশ বেড়েছে।
বিএসইসি, ডিএসই ও ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, নামে-বেনামে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৮২ শতাংশ শেয়ারই এখন এস আলম গ্রুপের হাতে রয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে এসব শেয়ার রয়েছে, সেগুলো হলো জেএমসি বিল্ডার্স, বিটিএ ফাইন্যান্স, প্যারাডাইস ইন্টারন্যাশনাল, এবিসি ভেঞ্চারস, এক্সেল ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, প্লাটিনাম এনডের্ভাস, এক্সেলশিয়র ইমপেক্স কোম্পানি, গ্র্যান্ড বিজনেস, লায়ন হেড বিজনেস রিসোর্সেস।
তালিকায় আরো রয়েছে- বিএলইউ ইন্টারন্যাশনাল, আরমাডা স্পিনিং মিলস, কিংসওয়ে এনডের্ভাস, ইউনিগ্লোভ বিজনেস রিসোর্সেস, সোলিড ইনস্যুরেন্স পিসিসি, হলিস্টিক ইন্টারন্যাশনাল, হাই ক্লাস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, ক্যারোলিনা বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, ব্রিলিয়ান্ট বিজনেস কোম্পানি, ব্রডওয়ে ইম্পেক্স কোম্পানি, পিকস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, এভাগ্রিন শিপিং, ম্যারাথন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, কিংস্টোন ফ্লাওয়ার মিলস ও পারসেপ্টা এনডের্ভাস। ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৮২ শতাংশ শেয়ার অবরুদ্ধ থাকায় বাজারে শেয়ার সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৮ ব্যাংকের সব শেয়ার অবরুদ্ধ করেছে অন্তর্র্বতী সরকার। ফলে লেনদেনযোগ্য শেয়ার কমেছে। যে কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার বিনিয়োগ চাহিদার শীর্ষে ছিল এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রিত চারটি ব্যাংক। সুযোগ নিচ্ছে তৃতীয়পক্ষ।
শেয়ার করুন-
প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪ , ৮:২৪ অপরাহ্ণ
আমরা কুকি ব্যবহার করি যাতে অনলাইনে আপনার বিচরণ স্বচ্ছন্দ হয়। সবগুলো কুকি ব্যবহারের জন্য আপনি সম্মতি দিচ্ছেন কিনা জানান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।