দুর্বল ৬টি ব্যাংককে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপরও চাহিদামতো টাকা মিলছে না বলে অভিযোগ করেন গ্রাহকেরা। এমনকি কিছু গ্রাহক দেশ-বিদেশের চিকিৎসা খরচ নির্বাহ, সন্তানের শিক্ষার ব্যয় এবং হজে যাওয়ার জন্য টাকা তুলতে পারছেন না।
বিশেষ করে ন্যাশনাল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদের ভোগান্তি হচ্ছে। টাকার জন্য ধরনা দিয়ে অনেকে খালি হাতে ফিরছেন। কবে সেই জমানো টাকা পাবেন, তার সদুত্তর দিতে পারছেন না ব্যাংকের শাখা পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
গ্রাহকের চাহিদামতো গত রবিবার থেকে ব্যাংকগুলোয় টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন গভর্নর। এরপর রবিবার এবং সোমবার দুর্বল কয়েকটি ব্যাংকের শাখা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের মতিঝিল শাখার গ্রাহক তারিক মাহমুদ বলেন, এই ব্যাংকে টাকা রেখে মহাবিপদে আছি। প্রতিদিন ঘুরায় কিন্তু টাকা দেয় না। অথচ আমরা গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। গ্রাহককে তার চাহিদামতো টাকা দেবে এসব ব্যাংক। কিন্তু বাস্তবে টাকা দিতে পারছে না। ১০ লাখ টাকার বদলে ৫ হাজার টাকা দিতে চায়। ভারতে চিকিৎসার জন্য যেতে পারছি না। আর ভিসার মেয়াদ আছে ২০ দিন। নতুন ভিসা পাওয়া অনেক দুষ্কর। এই ব্যাংক কেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না।
দিলকুশা শাখার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক তাহুরুল হক বলেন, আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ দিতে না পারলেও পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের রংপুর শাখার গ্রাহক মুনির হোসেন জানান, হজের যাওয়ার জন্য টাকা তুলতে পারছি না। শুধু বারবার তারিখ দেয় কিন্তু টাকা দেয় না। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জানান, গ্রাহকের চাহিদামতো টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে মিল নেই।
ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তৌহিদুল আলম খান বলেন, আমরা নগদ টাকা সবাইকে দিচ্ছি না। তবে আরটিজিএস পদ্ধতিতে টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু টাকা একবারে নিতে এলে দেওয়াটা কঠিন। কোনো গ্রাহক আর ফেরত যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ৬ ব্যাংকে এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে গত বৃহস্পতিবার জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
চাহিদামতো টাকা প্রদান সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু সব গ্রাহক যেন একবারে টাকা তুলতে না যায়। তখন বিপদ বাড়বে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক দায়িত্ব নিয়েছে। এখন সবাই টাকা পাবে। সামনে সংকট দূর হবে বলে আশা করা যায়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।