Homeডিএসই/সিএসইএসএমই মার্কেট চাঙ্গা

এসএমই মার্কেট চাঙ্গা

স্টাফ রিপোর্টার: স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোকে নিয়ে গঠিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এসএমই মার্কেট আড়াই মাস ধরেই চাঙ্গা অবস্থানে রয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ছয়টি কোম্পানি নিয়ে এ মার্কেটের যাত্রা হয়েছিল। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন ইস্যুতে মূল পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা গেলেও এর বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে এসএমই মার্কেটে।

স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের পরিমাণ কম হওয়ার কারণে তুলনামূলক কম বিনিয়োগেও এসএমই মার্কেটের সূচকে প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ বছরের ৩১ মে ডিএসই এসএমই সূচক ছিল ১ হাজার ৪৫ পয়েন্টে। এরপর থেকেই ক্রমে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ বুধবার সূচকটি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৬৬ পয়েন্টে। আড়াই মাসে ডিএসই এসএমই সূচক বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। সূচকটি চালুর পর এ বছরের ৩ মার্চ সর্বনিম্ন ৫৫৫ পয়েন্টে নেমে এসেছিল। এরপর থেকেই ক্রমে ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে সূচকটি।

এ বছরের ৫ এপ্রিল সূচকটি বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৭৪ পয়েন্টে। অবশ্য সূচক ও শেয়ারদর অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় এ বছরের ৭ এপ্রিল দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর ওঠানামার সীমা বা সার্কিট ব্রেকারে পরিবর্তন আনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

পরিবর্তিত  নিয়মানুসারে, এসএমই মার্কেটের শেয়ার দর বাড়া-কমার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সার্কিট ব্রেকার ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে একদিনে এ প্লাটফর্মের কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে কিংবা কমতে পারবে।

কমিশনের এ নির্দেশনার পর এ বছরের মে মাস পর্যন্ত নিম্নমুখী প্রবণতা দেয়া যায় ডিএসই এসএমই সূচকে। যদিও এরপর থেকেই আবারো ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে রয়েছে সূচকটি।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে বেঙ্গল বিস্কুটস, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়স, এপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস, মাস্টারফিড এগ্রোটেক, অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ও হিমাদ্রি লিমিটেডকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে এসএমই মার্কেট। বর্তমানে এ মার্কেটে ১৫টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে বেঙ্গল বিস্কুটস, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়স, এপেক্স ওয়েভিং, হিমাদ্রি লিমিটেড ও ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিলসকে ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট (ওটিসি) থেকে এসএমই প্লাটফর্মে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি ১০ কোম্পানি এ মার্কেটে কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টর অফারের (কিউআইও) মাধ্যমে নতুন করে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

বুধবার ডিএসইর এসএমই মার্কেটে লেনদেন হওয়ার ১৩ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে দাম বেড়েছে ১২টির, কমেছে ১টির। এ দিন এ মার্কেটে ৩৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মূল মার্কেটে হওয়া সেদিনের লেনদেনের চেয়েও বেশি।

ডিএসই এসএমই মার্কেটে গেল বুধবার টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষিবিদ ফিড, আচিয়া সি ফুড, মামুন এগ্রো ফুডস, বিডি পেইন্টস ও মাস্টার ফিড এগ্রোটেক লিমিটেড।

অন্যদিকে এ দিন মার্কেটটি দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে—কৃষিবিদ ফিড, অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, স্টার অ্যাডহেসিভ, নিয়ালকো অ্যালয়স ও বিডি পেইন্টস লিমিটেড।

গত ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৮৩৩তম কমিশন সভায় এসএমই মার্কেটে লেনদেনের ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে সর্বনিম্ন বিনিয়োগের পরিমাণ ২০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩০ লাখ টাকা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পুরনো যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য এ সিদ্ধান্ত পরিপালনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বিনিয়োগসীমা ২০ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকায় উন্নীত করতে তিন মাস সময় দেয়া হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এসএমই মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ার কারণে সহজেই এর শেয়ার দর প্রভাবিত হয়ে থাকে। এছাড়া এ প্লাটফর্মে বিনিয়োগকারীদের সংখ্যাও সীমিত। মূল মার্কেটের তুলনায় এখানে শেয়ার দর বাড়া-কমার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল।

ফলে সামষ্টিক অর্থনীতির বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এ মার্কেটের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। তাছাড়া যোগ্য বিনিয়োগকারীদের সর্বনিম্ন বিনিয়োগ ২০ লাখ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকায় উন্নীত করতে কমিশনের নির্দেশনার কারণেও এ মার্কেটে বিনিয়োগ বেড়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত