সকল মেনু

অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ অধিগ্রহণ নিয়ে ‘জলঘোলা’

সিনিয়র রিপোর্টার: অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তার অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অলটেক্স ফেব্রিক্স লিমিটেডকে অধিগ্রহণ করবে। তবে, অলটেক্স ফেব্রিক্সের বিরুদ্ধে অস্তিত্ব সঙ্কটসহ একাধিক আইন লঙ্ঘন ও অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে।

তাই, শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থে অলটেক্স ফেব্রিক্সকে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের অধিগ্রহণ প্রস্তাবের বিষয়ে অসম্মতি জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

অপরদিকে, অলটেক্স ফেব্রিক্সের আইন লঙ্ঘন ও অসঙ্গতির বিষয়ে প্রয়োজনীয় নধিপত্রসহ ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সম্প্রতি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

তবে এ বিষয়ে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের কোম্পানি সচিব মো. জিয়াউল হক বলেন, আমি কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নিয়ে কথা বলব না।

অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তার অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অলটেক্স ফেব্রিক্স লিমিটেডের ৯৯.৯০ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করে বিএসইসিতে আবেদন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের অধিগ্রহণের প্রস্তাবটি যাচাই করার নির্দেশ দেয় বিএসইসি।

পরবর্তীতে চলতি বছরের গত ১১ ও ১২ মে অলটেক্স ফেব্রিক্সের কারখানা প্রাঙ্গণ ও প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করে ডিএসই। তবে, পরিদর্শন কার্যক্রমে অলটেক্স ফেব্রিক্স লিমিটেডের কারখানার কর্মকর্তারা যথাযথভাবে সহযোগিতা করেননি এবং প্রয়োজনীয় নথি দেখাননি। কারখানা ভবনের প্রথম তলা বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই, কারখানার প্রথম তলার ভেতরে যেতে পারেনি পরিদর্শ দল।

কোম্পানির উৎপাদন সুবিধা, কাঁচামাল সংগ্রহ এবং পাদুকা ব্যবসা বন্ধের সময়কাল নিয়ে প্রধান কার্যালয়ের কর্মচারী এবং কারখানা প্রাঙ্গণের কর্মচারীদের বক্তব্যের মধ্যে অমিল পাওয়া গেছে।

এছাড়া, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, অলটেক্স ফেব্রিক্স এবং অলটেক্স ডাইং ফিনিশিং অ্যান্ড প্রিন্টিং মিলস নামে তিনটি কোম্পানি একটি একক কম্পাউন্ডের মধ্যে দেখা গেছে। তাই, অলটেক্স ফেব্রিক্সের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ডিএসইর পরিদর্শন দল।

একইসঙ্গে পরিদর্শন দলের কাজে অসহযোগিতা, প্রযোজনীয় তথ্য সরবরাহ না করা, মূল্য-সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ প্রকাশ না করা, বার্ষিক লিস্টিং ফি না দেওয়া এবং নিট মুনাফা ও ইপিএস বাড়িয়ে দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে, কোম্পানিটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (লিস্টিং) রেগুলেশন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করেছে বলে প্রতিবেদনের উল্লেখ করেছে ডিএসইর প্রতিনিধি দল।

প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানায় পুনরায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। কোম্পানিটি কারখানার আন্ডারগ্রাউন্ডের গ্যাস লাইন পুনরায় নির্মাণ করার জন্য কারখানা বন্ধ ছিল।

কারখানার গ্যাস লাইন মেরামতের সময় কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। এর আগে কোম্পানিটি গ্যাস লাইন মেরামতের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় দুই দফায় কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রথম দফায় ২০২১ সালের ২ নভেম্ববর থেকে ৪৫ দিন কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এরপর ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর থেকে আরও ৩০ দিন কারখানা বন্ধের সময় বাড়ানো হয়। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কোম্পানিটি পুনরায় উৎপাদনে শুরু করে জানায়।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার।

এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৪০.৭৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১০.৮৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৮.৪০ শতাংশ শেয়ার আছে। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার সর্বশেষ ২৪.৬০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top