স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ তার প্রথম কিস্তির ঋণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থা (আইএমএফ) থেকে। সংস্থাটি বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারী) ৪৭৬ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলারের ঋণ দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আইএমএফের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলারের ঋণ আজকে আমরা পেয়েছি। এতে রিজার্ভের পরিমাণ ৩২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারে দাড়িয়েছে।
আইএমএফ গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে ওই সময় আইএমএফ বলে, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা অক্ষুন্ন রাখা, দুর্বলকে সুরক্ষিত করা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশ সম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এই ঋণ।
দেশের সরকার অনুধাবন করে যে, তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত সমস্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয় আমলে নিতে হবে। প্রবৃদ্ধির গতি বাড়ানোসহ বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে জরুরি এসব বিষয়।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৪ জুলাই ঋণ চেয়ে আইএমএফের কাছে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। যদিও, ওই চিঠিতে ঋণের পরিমাণের কথা উল্লেখ ছিল না। পরে (১২ অক্টোবর) ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণসহায়তার কথা উল্লেখ করেন।
আইএমএফ সূত্রে জানা যায়, এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা বর্ধিত ঋণসুবিধা ও এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএএফএফ) বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার আওতায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে অনুমোদন করা হয়েছে- নতুন গঠিত তহবিল রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় আরও ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ।
বাংলাদেশ প্রথম দেশ হিসেবে আরএসএফ তহবিলের এই ঋণ পাচ্ছে বলে সংস্থাটি জানায়। অনুমোদনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে এখন ৪৭৬ মিলিয়ন বা ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার ঋণ দেয়া হবে। বাকি ঋণ দেয়া হবে পরবর্তী ৪২ মাসের মধ্যে।
আইএমএফ তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করে- মহামারি মোকাবেলা করে বাংলাদেশে দ্রুতগতিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হয়েছিল। যদিও, ইউক্রেনের-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ায় প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হয়।
এ অবস্থায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দেশীও মূদ্রা বা টাকার দরপতন হয়। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যায়। পাশাপাশি, কমে যায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে সমন্বিত ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ সরকার।