স্টাফ রিপোর্টার: আইটি কনসালট্যান্টস লিমিটেড রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রায় ২০ দশমিক শূন্য ৬৫ কাঠা জমি কেনার পর সেখানে ২৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিনিয়োগ কোম্পানির নিজস্ব তহবিল ও মেয়াদি ব্যাংকঋণের মাধ্যমে জোগান দেয়া হবে।
বিনিয়োগের পরিমাণ কোম্পানিটির সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখিত স্থায়ী সম্পদের ৫০ শতাংশের বেশি হবে। এক মূল্যসংবেদনশীল তথ্যে বিষয়টি জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিটি।
তথ্য অনুসারে, রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় দুই দাগে ১০ দশমিক ৪৭৮ ও ৯ দশমিক ৫৮৭ কাঠা জমি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইটি কনসালট্যান্টসের পর্ষদ। এজন্য কোম্পানিটির ৩৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ জমির ওপরে কোম্পানিটি দুইতলা বেজমেন্ট ও ১৩ তলাবিশিষ্ট একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করবে।
অত্যাধুনিক আইটি অবকাঠামো ও অত্যাধুনিক ডাটা কেন্দ্র স্থাপনে কোম্পানিটির মোট ব্যয় হবে ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৬ কোটি টাকা কোম্পানির নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। বাকি ২০৪ কোটি টাকা পর্যায়ক্রমে ব্যাংকঋণের মাধ্যমে জোগান দেয়া হবে।
ব্যাংকঋণের মাধ্যমে কোম্পানিটি প্রথম দফায় ৫০ কোটি টাকা, দ্বিতীয় দফায় ৫৭ কোটি ও তৃতীয় দফায় ৯৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।
এসব বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে আগামী ২৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিশেষ সাধারণ সভার (ইজিএম) আহ্বান করেছে কোম্পানিটি। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ধরা হয়েছে ২ এপ্রিল।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৮৪ পয়সা। আর সর্বশেষ দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫০ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৬৪ পয়সায়।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৬ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে আইটি কনসালট্যান্টস। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ৫৪ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। গত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ১৫ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৫ টাকা ৭৭ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)।
এর আগে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। ২০১৯-২০ হিসাব বছরেও একই হারে নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে আইটি কনসালট্যান্টস। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নগদ ও ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ছিল।
আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ১ টাকা ৫৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ১৯ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩০ জুন ২০১৯ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৬ টাকা ২৭ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৪ টাকা ৬৯ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩০ জুন ২০১৭-১৮ সমাপ্ত হিসাব বছরে ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয় আইটি কনসালট্যান্টস।
এছাড়া ২০১৬-১৭ হিসাব বছরে ৬ শতাশ নগদ ও ৪ শতাংশ স্টক এবং ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।
২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইটি কনসালট্যান্টসের অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১২৮ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৬২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১২ কোটি ৮৫ লাখ ৯২ হাজার ৬৬৪। এর মধ্যে ৫১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৩৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার আইটি কনসালট্যান্টসের শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ৩৬ টাকা ৪০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৩১ টাকা ও ৪৬ টাকা ১০ পয়সা।
সর্বশেষ বার্ষিক ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ১৯ দশমিক ৪৭, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ১৬ দশমিক ৭।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।