সকল মেনু

যুগ পার হলেও গ্রাহকরা ঋণ পরিশোধ করছে না জনতা ব্যাংকের

স্টাফ রিপোর্টার: জনতা ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা ২০১০ সালে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করছে না। ব্যাংক থেকে বারবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সময়ক্ষেপণ করেই এক যুগ পার। পাওনা টাকা না পেয়ে এখন আদালতের দারস্থ হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি।

ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জনতা ব্যাংকের উত্তরা মডেল টাউন কর্পোরেট শাখা থেকে মো. মশিউর রহমান নামের এক গ্রাহক ২০১০ সালে মেসার্স ফারজানা পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের অনুকূলে মোট ঋণ নেন ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। গ্রাহক গত ১২ বছরেও ঋণের টাকা পরিশোধ করেননি। ব্যাংক থেকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও সময়ক্ষেপণ করে আসছিলেন গ্রাহক। এক যুগ ধরে ঋণ পরিশোধ না করায় অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করে জনতা ব্যাংক।

সব কিছু পর্যালোচনা করে ফারজানা পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক মো. মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর তুরাগ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।

ব‌্যাংকের কাছে ফারজানা পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের মোট বকেয়ার পরিমাণ ৩ কোটি ৩১ লাখ ৭২ হাজার টাকা। শুধু মশিউর রহমান নন, জনতা ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না অনেক গ্রাহক।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, একসময় দেশে সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম ভালো ব্যাংক ছিল জনতা। ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের প্রধান উৎস ছিল ব্যাংকটি। ব্যাংকটি থেকে ঋণ নিয়ে সফল হয়েছেন দেশের অনেক শিল্পোদ্যোক্তা। সেই ব্যাংকটি নানা অনিয়ম-দুর্নীতি আর ঋণ কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত হয়ে দেশের খেলাপি ঋণের শীর্ষে উঠেছে। ব্যাংকটির মোট আমানতের এক তৃতীয়াংশ অর্থ প্রভাবশালী তিন গ্রাহকের কাছে জিম্মি হয়ে আছে।

গত মার্চ মাস শেষে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। জুনে তা বেড়ে হয়েছে ২৮ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা। ফলে ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের ৩০ দশমিক ৪৩ শতাংশ এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতার খেলাপি ঋণ শীর্ষে রয়েছে। ৫৯৮ কোটি টাকা প্রভিশন ঘাটতিতে রয়েছে ব্যাংকটি। এছাড়া মার্চ প্রান্তিকে ব্যাংকটির মূলধন সংকট রয়েছে ২ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা।

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল জব্বার বলেন, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। এজন্য যেসব খেলাপি গ্রাহক দীর্ঘসময় ধরে ঋণ পরিশোধে সময়ক্ষেপণ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

এছাড়া সারা দেশে বৃহৎ যেসব ঋণ খেলাপি আছে, তাদের বিরুদ্ধে জোরালো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top