গত কয়েকবছরে অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কাজে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বন্দরের কাজে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার ফলেই উন্নতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, একসময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে নানা কারণে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে কন্টেইনার জট লেগেই থাকতো।
কিন্তু কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বেসরকারি খাতে যাওয়ার পর সে অবস্থা আর নেই। এ নিয়ে বন্দর ব্যবহারকারীদের কোন অভিযোগ নেই। এসব কছিু সম্ভব হয়েছে বেসরকারি কোম্পানি সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ কাজের ফলে।
বিশেষ করে বন্দরের প্রাণ নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালটি (এনসিটি) দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করে আসছে কোম্পানিটি। বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কোম্পনিটি মিলে একটি ‘উইন উইন’ অবস্থার মধ্য দিয়ে কাজটি চলেছে। এতে করে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই রাজস্ব বেড়েছে ব্যাপক হাড়ে।
অথচ বিগত সরকারের আমলে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন সেবাকে বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেয়ার আয়োজন করা হয়েছিলো। আয়োজনের অংশ হিসেবে বন্দরের নতুন পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশী কোম্পানিকে দিয়ে দেয়া হয়। কোন প্রকার দরপত্র ছাড়াই হস্তান্তর করতে পিপিপি অথরিটি তৈরি করা হয়। একটি বিদেশী কোম্পানির প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে টার্মিনালটি ছেড়ে দেয়া হয়। বন্দর ব্যবহারকারীদের নানা আপত্তি থাকলেও তা কর্ণপাত হয়নি।
নতুন সরকার আসার কারণে প্রক্রিয়াটি আপাতত বন্ধ রয়েছে। বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে পিপিপি অথরিটি তৈরী করা হয়েছিলো পছন্দসই কোম্পানিগুলোতে বিনা দরপত্রে কাজ দেয়ার জন্য। মূলত বিদেশী কোম্পানিগুলোকে কাজ দেয়া হলেও পিছনে থাকতো স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র।
এনসিটি টার্মিনালের ধারণ ক্ষমতা ১.১ মিলিয়ন টিইইউএস। কিন্তু বর্তমান টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড ১.৩ মিলিয়ন টিইইউএস এ উন্নতি করে। যা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী। যা সম্ভব হয়েছে কোম্পানিটির সুদক্ষ ব্যবস্থাপনপ এবং আন্তর্জাতিক বন্দরের টার্মিনাল অপারেশনে কর্মরত দক্ষ বাংলাদেশী জনেবলের কারণে।
ইতিমধ্যে বন্দর ব্যবহারকারীরা, কন্টেইনার মালিকগণ, জাহাজের মালিকগণ সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড কোম্পানিটিকে প্রসংশাপত্র প্রদান করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালটি (এনসিটি) বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়া হলে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি ও রাজনীতিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। টার্মিনালে কর্মরত অনেকে চাকুরী হারাবে এবং বন্দরে অস্থীতিশীল পরিস্থিতি হওয়ার সংশয় রয়েছে।
বন্দরের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, এই টার্মিনালের পাশে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সামরকি ঘাটি অবস্থিত। যা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার জন্য হুমকি স্বরুপ। টার্মিনালটি বাংলাদেশী অপারেটরের অধীন দীর্ঘ সময়ের চুক্তি করা হলে ব্যাপক বৈদেশীক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। যা বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন কবরে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।