সকল মেনু

সেন্ট্রাল ফার্মার ৯৯ কোটি টাকার কর ফাঁকি

সিনিয়র রিপোর্টার: ২০০৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে প্রায় ৯৯ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ২০২০-২১ অর্থবছরেই ২ কোটি ৭৯ লাখ ৬৭ হাজার ৩৮৩ টাকার কর ফাঁকি দিয়েছে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে। সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের নিরীক্ষক জানিয়েছে, ২০০৭ থেকে ২১ সাল পর্যন্ত পর্যন্ত ৯৮ কোটি ৮২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫১ টাকা ট্যাক্স দেয়নি। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৬৭ হাজার ৩৮৩ টাকার ট্যাক্স দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে অর্থাৎ ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছে।

তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ।

এছাড়াও সঠিক সময়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। ফলে জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া ২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫১ টাকা খারাপ ঋণ হিসেবে বিবেচনা করেছে ব্যাংকটি। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে (৩০ জুন ২০২২) রিটেইন্ড আর্নিংস বা রিজার্ভে কোন টাকা দেখাতে পারেনি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।

এই সময়ে প্রায় একশো কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেছে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রকাশিত তথ্য তুলে ধরা হলো

নিরীক্ষক আরও জানিয়েছে, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস এপ্রিল ২০২২ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত তিন মাসের ব্যাংক ঋণের ওপর সুদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আসেনি। গত বছর কোম্পানিতে যোগ হওয়া ২ কোটি ৪০ লাখ ৮ হাজার ৭৯১ টাকার বিভিন্ন যন্ত্রাংশের কোন সঠিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।

এছাড়াও গত বছর (৩০ জুন ২০২১) ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন ছাড়া বাকি লেনদেন ক্যাশে করেছে। নিরীক্ষক সন্দেহ করছে, ক্যাশে লেনদেনের ফলে সেখানে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করে।

একইসঙ্গে, ৩০ জুন ২০২১ সমাপ্ত বছরে কত টাকা ব্যালেন্স রয়েছে তার কোন হিসাব দেখাতে পারেনি। এমনকি সর্বশেষ  কত টাকা ট্যাক্স দিয়েছে তারও কোন হিসাব দেখায়নি। পাশাপাশি মোট বিক্রিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সঠিক প্রমাণ নিরীক্ষকের কাছে উপস্থাপন করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।

কোম্পানির কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের টাকা নয়-ছয় করে দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

কর ফাঁকি সম্পর্কে কোম্পানি সচিব মো. তাজুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে আমরা ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারিনি; ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের ঘাটতি ছিল। আমাদের ম্যানেজমেন্ট চেষ্টা করছে লোন রিশিডিউল করতে। তবে লোন রিশিডিউল হলেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।

নিরীক্ষকের অভিযোগ অনুযায়ী ২০০৭ সাল থেকে ট্যাক্স দিচ্ছে না কোম্পানি, ব্যাংকের লোনও ঠিকভাবে পরিশোধ করতে পারেনি। এছাড়াও ব্যবসা পরিচালনায় বিভিন্ন কাগজপত্রের সঠিক প্রমাণ নিরীক্ষকের কাছে উপস্থাপন করতে পারেনি কোম্পানির কর্তৃপক্ষ।

এ সম্পর্কে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে প্রায় চারশো কোম্পানি। এতোগুলো কোম্পানির মধ্যে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট না দেখে কিছু বলতে পারবো না।

কোম্পানির ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট দেখে মন্তব্য করতে পারবো জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top