সকল মেনু

দেড়শর বেশি কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ল, সূচক-লেনদেনেও উত্থান

স্টাফ রিপোর্টার: নতুন সপ্তাহের শুরুটা ‘ঝলমলে’ হল পুঁজিবাজারে। এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন, সাড়ে তিন মাসের মধ্যে সূচকে সর্বোচ্চ লাফ দেখলেন বিনিয়োগকারীরা। এক দিনে দেড়শর বেশি কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ল রোববার, যা চলতি ২০২৩ সালে প্রথমবারের মত দেখা গেল।

গত ২২ ডিসেম্বর ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া ১৬৯টি কোম্পানির শেয়ারে নতুন করে সর্বনিম্ন দর আরোপের পর বৃহস্পতিবার সূচকের পতন দেখেছিল পুঁজিবাজার। তার আগে টানা দুই দিন উত্থানের পর সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে শেষ ঘণ্টায় দেখা দেয় বিক্রির চাপ।

নতুন সপ্তাহের প্রথম দিন শুরু থেকেই বাড়তে থাকে শেয়ার দর। পুরোটা সময় চালু থাকে এই ইতিবাচক প্রবণতা। শেষ পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সে যোগ হয় ৩৬ পয়েন্ট। গত ২২ নভেম্বর ৩৯ পয়েন্ট বাড়ার পর এক দিনে সর্বোচ্চ উত্থান এটি।

এদিন বেড়েছে ১৫২টি কোম্পানির দর, বিপরীতে দর হারিয়েছে ১৪টি। ১৭৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে। সব মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৩৪০টি কোম্পানির শেয়ার, চলতি বছর এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কোম্পানির লেনদেন এটা।

লেনদেন হয়েছে ৬৬২ কোটি ৩৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা, যা গত প্রায় এক মাসের সর্বোচ্চ।

এর চেয়ে বেশি লেনদন ছিল গত ৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন হাতবদল হয় ৭৪৮ কোটি ৪৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

ডিএসই স্টক ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমদ রশীদ লালী বলেন, প্রতিদিন বাজারে গুজব ছড়াত যে ফ্লোর প্রাইস উঠে যাচ্ছে। সেটি এখন আর নেই। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বড় বিনিয়োগকারী যারা সাইডলাইনে বসেছিলেন, তারা এখন সক্রিয় হচ্ছেন।

“সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও স্বস্তি এসেছে, তারা আশ্বস্ত হয়েছে। এ জন্য শেয়ার কেনা শুরু হয়েছে।”

ব্যাংক, বিদ্যুৎ জ্বালানি থেকে শুরু করে বড় মূলধনী বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারে এখনও আগ্রহ না ফেরার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “এগুলোর পরিশোধিত মূলধন অনেক বেশি। হয়ত ফ্লোর তুলে দিলে দাম একটু কমবে, তারপর বাড়বে।“

ফ্লোর পুনর্বহাল হওয়া কোম্পানির দরে লাফ

এমন দিনেও ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বড় মূলধনীর মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর শেয়ার ফ্লোর প্রাইসেই পড়ে আছে। সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধির তালিকায় ছিল ফ্লোর পুনর্বহালের কোম্পানিগুলো, যেগুলো টানা দরপতনে কোনোটির ৩০ শতাংশ, কোনোটির ৩৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের। ফ্লোর প্রত্যাহারের পর ৪০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে প্রতিদিন এক শতাংশ করে দর হারিয়ে নেমে এসেছিল ২৭ টাকা ৭০ পয়সায়। দুই দিন বেড়েই বর্তমান দর ৩৩ টাকা।

এছাড়া বিজিআইসি ও উসমানিয়া গ্লাসের দর ৯.৯৬ শতাংশ করে, শ্যামপুর সুগারের দর ৯.৯৪ শতাংশ, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দর ৯.৯২ শতাংশ, বসুন্ধরা পেপারের দর ৯.৮৫ শতাংশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের ও জেএমআই হসপিটালের দর ৯.৮০ শতাংশ করে, সমতা লেদারের দর ৯.৭২ শতাংশ, নাভানা ফার্মার দর বেড়েছে ৯.৬৩ শতাংশ বেড়েছে।

আরও তিনটি কোম্পানির দর ৯ শতাংশের বেশি, চারটির দর ৮ শতাংশের বেশি, ৭টির দর সাত শতাংশের বেশি, চারটির দর ৬ শতাংশের বেশি, ১২টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১৫টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ২৫টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ২৯টির দর ২ শতাংশের বেশি, ২৬টির দর এক থেকে দুই শতাংশ বেড়েছে।

এতদিন কমতে পারছিল না, সেগুলোর ধপাস

বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর হারিয়েছে ফ্লোর প্রাইস পুনর্বহাল হওয়া ইউনিয়ন ক্যাপিটালের। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ফ্লোর প্রত্যাহার করে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা এক শতাংশ করার পর টানা চার কর্মদিবস বেড়ে ৭ টাকা ৮০ পয়সা থেকে উঠে যায় ৯ টাকা ৯০ পয়সায়।

দরপতনের সীমা এক শতাংশে নামিয়ে আনার কারণে এটির শেয়ারদর কমা সম্ভব ছিল না। বিএসইসির নতুন সিদ্ধান্তে ফ্লোর পুনর্বহাল হলেও যেসব কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বর্তমান দরের চেয়ে কম ছিল, সেগুলো সেই দর পর্যন্ত নেমে আসতে পারবে।

দুই দিন দর হারিয়ে ৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে এই কোম্পানিটি নেমে গেছে ৮ টাকা ১০ পয়সায়।

আইসিবি থার্ড এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৫.৭৯ শতাংশ, এআইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৫.১৯ শতাংশ, ফাস ফাইনান্স ৩.৫৭ শতাংশ দর হারিয়েছে। এগুলোর সবগুলোর দর ফ্লোর প্রত্যাহারের পর বাড়লেও পরে কমতে পারছিল না।

এছাড়া মুন্নু অ্যাগ্রোর দর কমেছে ৩.১১ শতাংশ। বাকি আটটি কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে এক শতাংশের কম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top