Homeফান্ডামেন্টাল ডিটেইলসপুঁজিবাজারে ফের ‘ফ্লোরমুখি মিছিল’

পুঁজিবাজারে ফের ‘ফ্লোরমুখি মিছিল’

স্টাফ রিপোর্টার: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত ১২ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একদিন বাদে প্রতিদিনই ফ্লোর প্রাইস ৭৫ টাকায় লেনদেন হচ্ছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এ শেয়ার ফ্লোর ছাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে।

মার্চের প্রথম সপ্তাহে দর ৮০ টাকা ছাড়িয়েও যায়। এখন আবার ফিরেছে ফ্লোরে।

১৬৯টি কোম্পানিতে নতুন করে ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর বীমা খাতের আরেক কোম্পানি ইস্টল্যান্ডের সর্বনিম্ন দর ঠিক হয় ২৩ টাকা ৭০ পয়সা। এক সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর এই কোম্পানির শেয়ারদর ২৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়। পরে আবার ফিরেছে ফ্লোরে।

রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, স্টাইলক্রাফট, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজসহ আরও অনেক কোম্পানির ক্ষেত্রে একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

মার্চের শুরুতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়তে থাকলেও ‘সুখবর’ না আসায় সেটি আবার নিম্নমুখী। ফ্লোর ছাড়িয়ে যাওয়া কোম্পানিগুলোও ফিরতে শুরু করেছে তার ‘পতনের সর্বোচ্চ সীমায়’।

সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে এ মাসের সর্বনিম্ন। মাসের শুরুতে সাত শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেলেও তা নেমে এসেছে তিনশ কোটির ঘরে।

ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে বেশি দর রয়েছে, এমন ৮৬টি কোম্পানিতেই হল সিংহভাগ লেনদেন। ফ্লোর প্রাইসে হাতবদল হয়েছে, এমন কোম্পানির সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি, সব মিলিয়ে ২৩৪টি।

লেনদেনের দিক দিয়ে ফ্লোরে থাকা কোম্পানির বলতে গেলে কোনো অবস্থানই নেই। সব মিলিয়ে ১০ কোটি টাকাও হাতবদল হয়নি এসব কোম্পানিতে।

পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৬৯টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা এক শতাংশ করা হয়েছিল গত ২২ ডিসেম্বর। এই ‘পরীক্ষা’ সফল না হওয়ার পর তা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে ১ মার্চ। পরের কর্মদিবস থেকে সব শেয়ারেই ফ্লোর প্রাইস আরোপ হয়।

সোমবার সারা দিনে হাতবদল হয়েছে ২৪৪ কোটি ৬৬ লাখ ৪২ হাজার টাকা, যা আগের দিন ছিল সাড়ে চার শ কোটি টাকার কিছু বেশি।

এই লেনদেন গত ২৭ ফেব্রুয়ারির পর সর্বনিম্ন। সেদিন হাতবদল হয়েছিল ২৬১ কোটি ৭৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এরপর দিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বিনিয়োগকারীদেরকে ‘মার্চে সুখবর আসছে’ বলে জানিয়েছিলেন।

এই ঘোষণার পর এক সপ্তাহ বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর ফের নিম্নমুখী হয়েছে, সুখবর আসেনি।

সব মিলিয়ে গত সাত কর্মদিবসের মধ্যে পাঁচ দিনই কমেছে সূচক। রোববার ১২ পয়েন্টের পর সোমবার কমেছে ৩ পয়েন্ট।

সূচকের অবস্থান এখন ৬ হাজার ২০৫ পয়েন্ট, যা গত ৯ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। সেদিন ডিএসইর সূচকে ছিল ৬ হাজার ১৯১ পয়েন্ট।

এদিন দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা দুটি কোম্পানি লোকসানের কারণে গত এক যুগে লভ্যাংশ দিতে পারেনি, যাদের আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের ন্যূনতম আভাসও বাজারে নেই।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭.৩৬ শতাংশ বেড়েছে শ্যামপুর সুগারের শেয়ারদর, দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইমামবাটনের দর বেড়েছে ৬.৯৯ শতাংশ।

তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে থাকা একটি কোম্পানির চার শতাংশ এবং একটির দর বেড়েছে তিন শতাংশের বেশি। সাতটি কোম্পানির শেয়ারদরে যোগ হয়েছে ২ শতাংশের কিছু বেশি।

এর বাইরে ১৫টি কোম্পানির শেয়ারদর এক শতাংশের বেশি এবং বাকিগুলোর শেয়ারদর বেড়েছে এক শতাংশের কম। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর হারিয়েছে আলহাজ্ব টেক্সটাইল, যেটি লোকসানি কোম্পানি, কিন্তু গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে শেয়ারদর ক্রমেই বাড়ছিল। ১৩০ টাকা থেকে এই সময়ে শেয়ারদর বেড়ে হয়ে যায় ১৯৮ টাকায়।

এক দিনেই ১৯ টাকা ৬০ পয়সা কমে দর দাঁড়িয়েছে ১৭৬ টাকা ৪০ পয়সায়।

টানা দুই দিন দরপতনের সর্বোচ্চ সীমায় নেমেছে বেঙ্গল উইন্ডসরের শেয়ার। মন্দা বাজারে ‘দুর্বল’ এই কোম্পানির দর গত বছরের ২৪ অক্টোবর ২২ টাকা ১০ পয়সা থেকে টাকা বাড়তে বাড়তে ১৪ মার্চ উঠে যায় ৪২ টাকা ৮০ পয়সায়। এরপর শুরু হয় পতন। গত দুই দিনে প্রায় ২০ শতাংশ হারিয়ে শেয়ারদর এখন নেমেছে ৩১ টাকা ৭০ পয়সায়।

বহুল আলোচিত ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর নেমে এসেছে আড়াই শ টাকার ঘরে। গত বছরের জুলাইয়ে একশ টাকার নিচে ছিল কোম্পানিটির শেয়ারদর। অস্বাভাবিক এক উত্থানে অক্টোবরে হয়ে যায় এক হাজার টাকা। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় পতন। বর্তমান দর ২৫৫ টাকা ২০ পয়সা। আগের দিনের চেয়ে কমেছে ৫.৩৮ শতাংশ।

আরও একটি কোম্পানির ৪ শতাংশ, একটির ৩ শতাংশ, ৫টির দুই শতাংশের বেশি দর কমেছে। ৯টির দর কমেছে এক শতাংশের বেশি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত