স্টাফ রিপোর্টার: এফবিসিসিআই নির্বাচনে কর খেলাপ ও ঋণ খেলাপসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ৩২ ব্যবসায়ীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে এই নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড। তবে বুধবার আপিলের শেষ দিনে বাতিল হওয়াদের প্রায় সবাই প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছে আপিল বোর্ড।
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে কর খেলাপি ও ঋণ খেলাপির অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এজন্য নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুকদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছ থেকে কর খেলাপি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবির (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) কাছ থেকে ঋণ খেলাপিদের তথ্য সংগ্রহ করে থাকে এফবিসিসিআই নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড।
নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের সদস্য এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মো. শামছুল আলম বলেন, প্রার্থীদের বিষয়ে তথ্য জানতে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরকে চিঠি দিয়েছিলাম। এনবিআর থেকে যেসব প্রার্থী কর খেলাপি বলে আপত্তি এসেছে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যেসব প্রার্থীর বিষয়ে ঋণ খেলাপি হিসেবে তথ্য এসেছে, তাদেরও বাতিল করা হয়েছে।
তিনি একইসঙ্গে বলেন, এখন কোন কোন প্রার্থী হয়ত এনবিআরে গিয়ে কর পরিশোধ করে আপিল বোর্ড থেকে প্রার্থিতা ফিরে পাবেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যারা ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, তাদের প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া কঠিন।
প্রার্থিতা ফিরে পেতে অনেকে আবেদন করেছেন জানিয়ে আপিল বোর্ডের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন বলেন, আগামী ১৩ থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে তারা আপিল আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করবেন।
এফবিসিসিআইর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন হবে আগামী ৩১ জুলাই ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।
অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে বাতিল প্রার্থী: এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে অংশ নিতে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে খেলাপি করের কারণে। তিনি বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে বিএবির প্রতিনিধিত্ব করতে চাইছেন।
কর খেলাপি হিসেবে প্রার্থিতা বাতিলের তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশে পুরনো গাড়ি আমদানিকারকদের সংগঠন বারভিডার (বাংলাদেশ রিকন্ডিশনড ভেহিকলস ইমপোরটার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন) সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন। তিনি এফবিসিসিআইর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি।
এছাড়া কর খেলাপের কারণে প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে মোহাম্মদ মুনসুর, শাহাব উদ্দিন খান, সৈয়দ সাদাত আলমাস কবির, নিজাম উদ্দিন রাজেশ, হাজি মো. আবুল হাশেম, সিরাজুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম, সালমা হোসেন অ্যাশ, জাকির হোসেন, তালহা আহমেদ সিদ্দিকী, মোহাম্মদ আবুল বাশার, খন্দকার এনায়েত উল্লাহর।
এছাড়া ঋণ খেলাপি ও কর খেলাপি হওয়ায় প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে শফিকুল ইসলাম ভরসা, আবুল হোসেনের।
কেবল ঋণ খেলাপির দায়ে বাতিল হয়েছে মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, খন্দকার রুহুল আমিন ও কেএম আক্তারুজ্জামানের প্রার্থিতা।
চেম্বার গ্রুপ থেকে বাতিল প্রার্থী: কর খেলাপি হওয়ায় হাসিনা নেওয়াজ, শাহ জালাল, মোহাব্বত উল্লাহ, আবুল কাশেম খান, সামিউল হক সাফা, সুজিব রঞ্জন দাসের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। ঋণ খেলাপি হওয়ায় আলী হোসেন শিশিরের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।
কর ও ঋণ খেলাপি হওয়ায় মোহাম্মদ রিয়াদ আলী, মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান ভূঁইয়া, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।
এদিকে ঋণ খেলাপি ও কর খেলাপি না হলেও স্বাক্ষরে গরমিল থাকায় ফজলে শামীম এহসান, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া ভোটার নম্বর অস্পষ্ট হওয়ায় মৌসুমী ইসলাম ও মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
ফজলে শামীম এহসান বলেন, কী কারণে এমনটি হল, আমি বুঝলাম না। আমি আপিল করেছি। আশা করি, সেখান থেকে একটা ইতিবাচক ফল পাব।
এদিকে গত ১০ জুলাই যাচাই বাছাইয়ের সময় চেম্বার গ্রুপের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হাসিনা নেওয়াজ ও ঢাকা চেম্বারের মনোনীত প্রার্থী আবুল কাসেম খানের প্রার্থিতা বাতিল করেছিল নির্বাচন বোর্ড। তবে ১২ জুলাই এই দুজনের কর খেলাপির বিষয়ে অনাপত্তিপত্র দেয় এনবিআর। ফলে এই দুজনের প্রার্থিতা ফিরে আসছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।