স্টাফ রিপোর্টার: ক্যাশলেস সোসাইটি গঠনের লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল ব্যাংক’ খোলার অনুমতি দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে আবেদন চেয়েছিল; তাতে সাড়া মেলেনি। দেশে ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের পথ সুগম করতে নীতিমালা অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক; নতুন ধরনের এ ব্যাংক গড়তে উদ্যোক্তাদের মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা।
৩০ জুলাই পর্যন্ত একটি আবেদনও জমা না পড়ায় আবেদন করার সুযোগ ১৬ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রোববার এক সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, কেউ ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে চাইলে আগামী ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে।
এ আবেদন গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২১ জুন একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করে, যা ১ অগাস্ট পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে জানানো হয়েছিল সে সময়। তবে এক মাস ৯ দিনে একটি আবেদনও জমা পড়েনি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র ও পরিচালক সারোয়ার হোসেন বলেন, মেয়াদ শেষের দিন ওয়েবপোর্টালে থাকা আবেদন জমা হওয়ার বক্সের লক খোলা হবে। আগামী ১৭ অগাস্ট জানা যাবে কয়টি আবেদন জমা পড়েছে।
রোববারের সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, আবেদনের লক্ষ্যে সকল আবেদনকারীর পূর্ণাঙ্গ ও মানসম্মত প্রস্তাব তৈরি এবং বিভিন্ন দলিলাদি সংগ্রহের বিষয়টি বিবেচনা করে আবেদনপত্র দাখিলের সময় ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স নেওয়ার আলোচনায় থাকা এমএফএস কোম্পানি ‘বিকাশ’ বা ‘নগদ’ ৩০ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করেনি। তবে এ লাইসেন্স পেতে আগ্রহী বলে আবারও জানিয়েছেন তারা।
বিকাশের কর্পোরেট কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, আমরা ডিজিটাল ব্যাংক পেতে আগ্রহী। এখনো আবেদন করা সম্ভব হয়নি। আমরাও প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আর ‘নগদ’ এর জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জাহিদুল ইসলাম সজল বলেন, নগদ এখনো আবেদন করেনি, তবে করবে। নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ১২৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। কোনো খেলাপী এ ব্যাংকের উদ্যোক্তা হতে পারবেন না।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ডিজিটাল ব্যাংকের একটি প্রধান কার্যালয় থাকবে বাংলাদেশে। এই কার্যালয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও সার্পোট স্টাফদের দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি সশরীরে বা ডিজটাল পদ্ধতিতে গ্রাহকের অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির কাজটি এই কেন্দ্রীয় দপ্তরে হবে।
কিন্তু ডিজিটাল ব্যাংকগুলো প্রচলিত ব্যাংকের মত সরাসরি কাউন্টারে গ্রাহকদের লেনদেন সেবা দিতে পারবে না। এ ব্যাংকের নিজস্ব কোনো শাখা, উপশাখা, এজেন্ট বা উইন্ডো থাকবে না। এমনকি নিজস্ব কোনো এটিএম/সিডিএম/সিআরএম বা স্পর্শযোগ্য ইনস্ট্রুমেন্ট থাকতে পারবে না।
ডিজিটাল ব্যাংকে গ্রাহক হিসাব খোলা হবে কেওয়াইসি পরিপালন করে অনলাইনে। হিসাব খোলার পর ভিন্ন কোনো ব্যাংক বা এমএএফএস এজেন্ট, এটিএম বুথ, সিডিএম, সিআরএম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অনলাইনে অর্থ স্থানান্তর এবং ব্যবহার করতে পারবে গ্রাহক। নিজের অ্যকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যাবে একই পদ্ধতিতে।
লেনদেন সহজ করতে ভার্চুয়াল কার্ড, কিউ আর কোড বা অন্য কোনো অগ্রসরমান প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য চালু করতে পারবে ডিজিটাল ব্যাংক। এ ব্যাংকের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, শিক্ষার্থীর বেতন, সার্ভিস চার্জ ও ট্রেজারি চালানসহ সরকারি বিভিন্ন ফি আগের চেয়ে কম সময় ও কম খরচে দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্ঠরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।