সিনিয়র রিপোর্টার : চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ এলাকায় রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) একটি কারখানা ও ১০০ শতক জমি বিক্রি করে ঋণের টাকা আদায় করতে নিলাম ডেকেছে সোনালী ব্যাংক। চট্টগ্রামভিত্তিক ইস্পাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আরএসআরএমের কাছে সোনালী ব্যাংক এই নিলামের মাধ্যমে ২০১ কোটিরও বেশি টাকা আদায়ের চেষ্টা করছে।
এটি শুধু এক ব্যাংকের ছোট অংক, আরএসআরএমের মূল প্রতিষ্ঠান রতনপুর গ্রুপের কাছে ১০ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সবমিলিয়ে পাবে দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা। ঋণ হিসেবে নেওয়া এই বকেয়া আদায়ের জন্য এখন পর্যন্ত আরএসআরএমসহ তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের এক মামলা এবং জনতা ব্যাংকের দুই মামলায় আরএসআরএমের মালিকদের বিরুদ্ধে রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও।
১০ ব্যাংকের ২২০০ কোটি দিচ্ছেই না চট্টগ্রামের আরএসআরএম।
এসব মামলায় রতনপুর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাকসুদুর রহমান, চেয়ারম্যান শামসুন নাহার রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দুই ছেলে— মিজানুর রহমান ও মারজানুর রহমান, পরিচালক ইউনুস ভুঁইয়া এবং মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।
রতনপুর গ্রুপের কাছে জনতা ব্যাংক লালদিঘি শাখা একারই পাওনা রয়েছে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রতনপুর গ্রুপের মালিকানাধীন মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের নামে রয়েছে ৪০৯ কোটি টাকা, রতনপুর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের নামে আছে ৩১৩ কোটি টাকা এবং এসএম স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের নামে পাওনা রয়েছে ৪৮২ কোটি টাকা।
জনতা ব্যাংক লালদিঘি শাখা এই তিনটি কোম্পানির বিরুদ্ধে মোট মামলা করেছে ছয়টি। এর মধ্যে দুটি মামলায় আরএসআরএমের মালিকদের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও।
রতনপুর গ্রুপের কাছে সবমিলিয়ে ৬৬৩ কোটি টাকা পাবে সোনালী ব্যাংক। এর মধ্যে মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের নামে ঋণ রয়েছে ৪৬২ কোটি টাকা এবং রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের নামে ঋণ রয়েছে ২০১ কোটি টাকা। পাওনা টাকা চেয়ে সোনালী ব্যাংক ইতিমধ্যে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ১২টি মামলা করেছে।
এছাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংক রতনপুর গ্রুপের রতনপুর শিপ রিসাইক্লিংয়ের কাছে পাবে ১৫০ কোটি টাকা। গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকও ওই একই প্রতিষ্ঠানের কাছে পাবে ৫৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে ট্রাস্ট ব্যাংক মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের কাছ থেকে পাবে ৬০ কোটি টাকা।
রতনপুর গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান এসএম স্টিল রি-রোলিং ৫৫ কোটি টাকার ঋণখেলাপি হয়ে বসে আছে লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের কাছেও। ওই একই প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রাইম ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পাওনা রয়েছে ২৪ কোটি টাকা। প্রাইম ফাইন্যান্স গত এপ্রিলে এসএম স্টিলের কর্ণধারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে ৪২০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে।