Homeঅর্থনীতিনতুন চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি ও ডলার রেট: গভর্নর

নতুন চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি ও ডলার রেট: গভর্নর

স্টাফ রিপোর্টার : করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমতেই দেশে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের বিনিময় রেট। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

শনিবার (১৮ জুন) রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রমের ২০ বছর’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

গভর্নর বলেন, আমাদের যে রিজার্ভ রয়েছে তাতে ভয়ের কিছু নেই। সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান ডলার মজুদ থাকলে তা স্থিতিশীল ধরা হয়। বর্তমানে আমাদের ৪১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। বর্তমানে এক মাসে আমদানি ব্যয় মেটাতে লাগে সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলার। সেই হিসেবে তিন মাসের আমদানি ব্যয় পরিশোধে ব্যয় হবে সাড়ে ২২ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া সরকারের নিরাপত্তাসামগ্রী বাবদ আরো তিন বিলিয়ন ডলার দরকার হয়। সব মিলে ২৬ বিলিয়ন ডলার থাকলেই চিন্তা মুক্ত থাকা যায়, বলেন গভর্নর।

তিনি বলেন, গত অর্থবছরে ব্যাংগুলো থেকে ৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কারণ, সে সময় করোনার কারণে আমদানি ব্যয় কম প্রয়োজন ছিল। চলতি অর্থ বছরের শুরু থেকে আমদানি ব্যয়ের পরিমাণ বাড়ায় ব্যাংকগুলোর কাছে চাহিদা অনুযায়ী ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ফজলে কবির বিএফআইইউর বিষয়ে বলেন, এন্টি মানি লন্ডারিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সংস্থাটি। লন্ডারিংয়ের টাকা যাতে সন্ত্রাসে ব্যয় না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বন্যায় কবলিত এলাকার বিষয়ে গভর্নর বলেন, সিলেটের কৃষকরা ঋণ পরিশোধ করুক বা না করুক, তাদের ঋণ বিতরণ বাড়িয়ে দিতে হবে। এছাড়া বন্যার্ত এলাকায় সিএসআর খাত থেকে ব্যয় করতে হবে।

বিএফআইইউ’র অতিরিক্ত পরিচালক কামাল হোসেন বলেন, পাচার করা অর্থ উদ্ধার জটিল কাজ। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পর্কে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছে বিএফআইইউ। আর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকে থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থের বিষয়ে ২০১৪ সাল থেকে তথ্য প্রকাশ করে আসছে ব্যাংকটি।

সেই তথ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দুদক ও তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। আর এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ৮০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আর্থিক তথ্য সংগ্রহ করেছে বিএফআইইউ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব সলিমুল্লাহ বলেন, মানিলন্ডারিং মানে শুধু বিদেশে টাকা পাচার নয়। অবৈধ উপার্জিত অর্থ বৈধতার চেষ্টা করা হলে সেটিকেও মানি লন্ডারিং বলা হয়। আর যেহেতু বাংলাদেশের টাকা বিদেশে চলে না, তাহলে লন্ডারিং হচ্ছে কেন। মূলত টাকা পাচার হচ্ছে না, বরং দেশের সম্পদ পাচার হয়।

একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, রপ্তানির মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে। এছাড়া হুন্ডির মাধ্যমে কিছু টাকা পাচার হয়। অর্থপাচারের দুর্বলতা হিসেবে সংশ্লিষ্টদের বুঝতে না পারা এবং সিস্টেম দায়ী। আর সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রাখা মানেই পাচার নয়। উন্নত বিশ্বের অনেকেই সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন। এর সব কি পাচারের মধ্য পড়ে।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি মাসরুর আরেফিন বলেন, ই-কমার্সে নজরদারি বাড়ানো দরকার। কারণ, অল্প-অল্প করে হলেও এর মাধ্যমে অনেক টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। আর মানিলন্ডারিং রোধে তথ্য প্রবাহ বাড়াতে হবে।

ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী বলেন, ব্যাংক নিজে মানিলন্ডারিং করে না। কিন্তু গ্রাহকের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। এটি রোধে সাধারণ মানুষকে ব্যাংক মুখী করতে হবে। মানুষ যত ব্যাংকের কাছে আসবে, মানিলন্ডারিং তত কমবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সাত দিনের সর্বাধিক পঠিত