সিনিয়র রিপোর্টার: পুঁজিবাজারে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের (এটিবি) কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে। তবে চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শেষে বা আগামী অক্টোবর মাসে এটিবি প্ল্যাটফর্ম শুরু হওয়ায় আভাস মিলেছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গত আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) প্ল্যাটফরম রেগুলেশন’ অনুমোদন দেয়। অনুমোদিত রেগুলেশন এখন গেজেট আকারে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। গেজেট প্রকাশ হলেই অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) চালু করা হবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান মজুমদার।
তবে এটিবি মার্কেট চালু সম্পর্কে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, এটিবি মার্কেট চালু করতে যে প্রস্ততির দরকার ছিল তা নেয়া হয়েছে। এ মার্কেট চালু করতে আমরা এখন সার্বিকভাবে প্রস্তুত। দিনক্ষণ উল্লেখ না করে তিনি বলেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ মার্কেটের লেনদেন শুরু হবে।
অতালিকাভুক্ত কোম্পানির সিকিউরিটিজ, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট বন্ড, সুকুক এবং ওপেন অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ড এটিবি বোর্ডে লেনদেন করবে।
শামসুদ্দিন আরও জানান, এ বোর্ডে তালিকাভুক্ত প্রোডাক্টগুলোর সার্কিট ব্রেকার হবে ৫ শতাংশ। অর্থাৎ এটিবি বোর্ডে লেনদেন করা অতালিকাভুক্ত কোম্পানির সিকিউরিটিজ, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট বন্ড, সুকুক এবং ওপেন অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে বা কমতে পারবে।
বিলুপ্ত ওটিসি মার্কেটের ১৮ টি কোম্পানি এটিবি মার্কেটে লেনদেন হবে। কোম্পানিগুলো হলো—বাংলা প্রসেস ইন্ডাস্ট্রিজ, ড্যান্ডি ডাইং, ডায়নামিক টেক্সটাইল, মেটালেক্স করপোরেশন, মিতা টেক্সটাইল, মডার্ন সিমেন্ট, মডার্ন ইন্ডাস্ট্রিজ, মোনা ফুড প্রোডাক্টস, পারফিউমস কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রেট্রো সিনথেটিক্স প্রোডাক্টস, ফর্মাকো ইন্টারন্যাশনাল, কাশেম সিল্ক মিলস, কাশেম টেক্সটাইলস মিলস, রাসপিট ইনকপোরেশন বিডি, রোজ হ্যাভেন বলপেন, সালেহ কার্পেট মিলস, শ্রীপুর টেক্সটাইল মিলস এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ।
কোম্পানির উৎপাদন না থাকা, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণসভা (এজিএম) না করা, কাগুজে শেয়ার ডিমেট না করা, নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেয়া ও লভ্যাংশ প্রদান না করা এবং সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন না করায় মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে শাস্তি স্বরূপ স্থানান্তর করা হয়েছিল।
এদিকে, ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট থেকে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তর হবে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রোজ হ্যাভেন বলপেন। স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিষয়ে কোম্পানিটি এখনও কোনও প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি।
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা কোম্পানিটির কারখানায় নেই কোন সাইনবোর্ড। কারখানায় একটি দোতলা ভবন ছাড়া তেমন অবকাঠামো নেই। এমনকি দোতলা ভবনটি যে জমিতে অবস্থিত সেটাও আরেক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ রয়েছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি রোজ হ্যাভেন বলপেনের কারখানা পরিদর্শন করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) এমনই তথ্য জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
আর ওই তথ্যের ভিত্তিতে রোজ হ্যাভেন বলপেনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পরিচালনা পর্ষদের কাছে ব্যাখ্যা ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র চেয়েছে বিএসইসি। একইসঙ্গে ব্যাখ্যাসহ নথিপত্র প্রদানের ব্যর্থ হলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে কমিশন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে দেশের উভয় পুঁজিবাজারে ওটিসি মার্কেট চালু এবং গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর এ মার্কেটের কার্যক্রম অকার্যকর করে বিএসইসি।