স্টাফ রিপোর্টার: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পূর্ব নির্ধারিত সময়ের দুই দিন পর শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের (আইসিআইসিএল)। এতে ওই কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের শেয়ারপ্রতি গচ্ছা যায় ২ টাকার বেশি।
সম্প্রতি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) সম্পন্ন করা ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির গত বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দেশের উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করার কথা ছিল। ওইদিন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হলেও ডিএসই তা পারেনি।
ডিএসই তার দুই কর্মদিবস পর রোববার ( ১৮ডিসেম্বর) শেয়ারটির লেনদেন শুরু করলেও বিলম্বের কারণ জানায়নি। এতে নিয়মের অপবর্তন হওয়ায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ডিএসইর প্রতি ক্ষুব্ধ বলে নির্ভরযোগ্য সত্রে জানা গেছে।
সূত্র মতে, বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নিয়মানুযায়ী, আইপিও শেষ করে কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে লেনেদেন শুরুর দিন শেয়ারের সার্কিট ব্রেকার থাকে ১০ শতাংশ। অর্থাৎ, ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার লেনদেন হতে পারবে সর্বোচ্চ ১১ টাকায়।
অপরদিকে, বীমা খাতের এ কোম্পানি ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের লেনদেন ১৩ টাকা ৩০ পয়সায় শুরু হয়। বিএসইসির বিধান অনুযায়ী যা আইন পরিপন্থী।
ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুর রহমান মজুমদার এ বিষয়ে বলেন, কোম্পানি কোড একই হওয়ার কারণে গত বুধবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু করা যায়নি। পরদিন বৃহস্পতিবারও লেনদেন হয়নি। তিনি বলেন, রোববার নতুন কোম্পানি কোডে লেনদেন হয়েছে শেয়ারটির।
কোম্পানিটির লেনদেনের প্রথম দিনে ১০ শতাংশ সার্কিট ব্রোকার অতিক্রম করার বিষয়ে সাইফুর রহমান বলেন, ১৪ ডিসেম্বর সিএসইতে শেয়ারটির লেনদেন শুরু হয়। রোববার ডিএসইতে লেনদেন শুরুর সময় সিএসইর ক্লোজ প্রাইসকে রেফারেন্স প্রাইস হিসেবে ধরা হয়েছে। যেকারণে লেনদেনের প্রথম দিনই শেয়ারটির দর ১৩ টাকা ৩০ পয়সায় অবস্থান করে। তাঁর মতে, শেয়ারটির এ লেনদেন স্বাভাবিক।
ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ডিএসইতে ২ কর্মদিবস পর লেনদেন শুরু করায় প্রতি শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ২ টাকা ৩০ পয়সা অতিরিক্ত ব্যয় হয় (শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে)। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, বিএসইসির হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
বিএসইসির অনুমোদনক্রমে এর আগে জেএমআই সিরিঞ্জ লিমিটেডের শেয়ার ডিএসইতে লেনদেন শুরু করার দিন সিএসইর প্রাইসকে রেফারেন্স প্রাইস হিসেবে ধরা হয়েছিল। অপরপক্ষে, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের লেনদেনের ক্ষেত্রে বিএসইসির অনুমোদন নেয়া হয়নি।
ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের কোম্পানি সচিব আখতারুজ্জামান বলেন, সিএসইর বৃহস্পতিবারের ক্লোজ প্রাইস অনুযায়ী রোববার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় শেয়ারটির। তবে, বিষয়টি নিয়মের মধ্যে পড়ে কিনা- এমন ধারণা তাঁর নেই।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের লেনদেন ২ দিন বিলম্বে শুরুর বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে আইনগত দিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে।
লেনদেন বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, রোববার ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের লেনদেন ’এন’ ক্যাটাগিরিতে শুরু হয়। আর, শেয়ার মার্কেটে এর ট্রেডিং কোড “ICICL” এবং কোম্পানি কোড নম্বর ২৫৭৫৬।
কোম্পানিটি ১০টাকা অভিহিত মূল্যে ২ কোটি ২ লাখ ৬১ হাজার ১০৬টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ২০ কোটি ২৬ লাখ টাকা উত্তোলন করে। উত্তোলিত অর্থ কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ, সরকারি ডিপোজিট ক্রয়, স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যবহার করবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।