স্টাফ রিপোর্টার: বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখার মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে বৃহত্তর পরিসরে উপস্থাপন করাই হচ্ছে বিএসইসির লক্ষ্য৷ এই লক্ষকে এগিয়ে নিতে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য যেকোনো ভালো পরামর্শকে বিএসইসি স্বাগত জানায়৷
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত ডিএসই’র ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারস, চেয়ারম্যান, পরিচালক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের জন্য ‘Strengthening the Securities of Fund and Securities of Investors” শীর্ষক তিন দিনব্যাপী (২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি/২০২৩) সচেতনতামূলক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. আব্দুল হালিম এ কথা বলেন।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) ডিএসই থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিএসইসি কমিশনার বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চাই৷ তবে, ক্ষেত্রবিশেষে কঠোরও হতে হয়৷ যিনি অনিয়ম করবেন বা পুঁজিবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করবেন, তারা কেবল নিজের ক্ষতিই করেন না। -বরং, সমগ্র পুঁজিবাজারই ক্ষতিগস্ত হচ্ছে তাদের কারণে।
তিনি বলেন, অনিয়মকারীরা কোনভাবে পুঁজিবাজারের বন্ধু হতে পারে না৷ তাদের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী যেমন কঠোর হওয়া প্রয়োজন, কমিশন তেমন ভূমিকা পালন করবে৷ তবে, আমরা আদৌ এ পথে যেতে চাই না।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে পুঁজিবাজার উন্নয়নকল্পে কাজ করে যেতে চাই৷ ট্রেকহোল্ডারদের অনেকে দেশে থাকেন না। বিশ্বস্ত কর্মচারীর মাধ্যমে তারা ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এতে কিছু সমস্যা ও অনিয়ম দেখা দিতে পারে৷ এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের স্টক এক্সচেঞ্জের কিছু ট্রেকহোল্ডার কোম্পানি দুর্বল অবস্থানে রয়েছে৷ এ পরিস্থিতি থেকে যাতে তাদের দ্রুত উত্তরণ ঘটে, বিএসইসি এমনটাই চায়। আইন অনুযায়ী যে মনিটরিং এবং এনফোর্সমেন্ট করতে বলা হয়েছে, তা কমিশনের দায়িত্ব৷
তিনি বলেন, মনিটরিংয়ের ফলে যেসব ব্রোকারেজ হাউজ সামান্য ঘাটতিতে আছে, তা নজরে আসে। এতে ঘাটতি অতিক্রম করার সুযোগ পাওয়া যায়৷ অন্যথায় সামান্য ঘাটতিগুলো যখন বড় আকার ধারণ করে, তখন আর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। যেকারনে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে পুঁজিবাজারে। -যা আমরা চাই না৷
কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রে বিএসইসি কমিশনার বলেন, যদি আপনারা সব কিছু সঠিকভাবে মেনে চলেন, তবে কমপ্লায়েন্সের প্রয়োজন পড়বে না৷ যে রুলস এবং রেগুলেশনগুলো এসেছে, আমাদের উদ্দেশ্য হলো- কর্মশালার মাধ্যমে আপনাদের এই রুলস এবং রেগুলেশনগুলো জানানো। -যাতে আপনারা ভুলগুলো শোধরানোর মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে উত্তরণের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারেন। সেইসঙ্গে, পুঁজিবাজারে অবদানও রাখতে পারেন৷
কমিশনার আরো বলেন, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো ট্রেক-হোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করছে, তা আমাদের জানান৷ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষার পাশাপাশি আপনাদের স্বার্থ যাতে সংরক্ষিত হয়, সে বিষয়টি আমরা দেখব৷
তিনি বলেন, প্রতিকূল পরিবেশের একটা ইতিবাচক দিক হলো- এর মাধ্যমেই অনেক ভালো ভালো উদ্ভাবনী বিষয়বস্তু আসে৷ আর, প্রতিকূল পরিবেশকে অতিক্রম করার জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন, কমিশন তা গ্রহণ করবে৷
কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- ডিএসই’র চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান৷
ইউনুসুর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সচেতনতামূলক এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে৷ কর্মশালার বিষয়বস্তু অত্যন্ত সময়োপযোগী৷
তিনি বলেন, সিকিউরিটিজ হাউজকে পরিচালনা করতে আইনকানুনগুলো কিভাবে প্রতিপালন করা যায়, তা নিয়ে আজকের এ আলোচনা৷ পুঁজিবাজারে প্রচুর আইনকানুন হয়েছে৷ ঠিকমতো সেসব পরিপালন না করলে পুঁজিবাজারে সু-শাসন নিশ্চিত হবে না৷
তিনি আরো বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে বিভিন্ন আইন-কানুন, বিধি-বিধান প্রণয়ন করে থাকে বিএসইসি। আর, তা আমাদের পরিপালন করতে হয়।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারের ইমেজ ট্রেকহোল্ডারদের উপর নির্ভর করে। কারণ, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আপনাদের কাছে আসে। কমিশন এবং এক্সচেঞ্জের সাথে তাদের সরাসরি যোগাযোগ খুবই কম হয়।
তিনি বলেন, যদি আপনারা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বজায় রাখতে পারেন, তবে কমিশন এবং স্টক এক্সচেঞ্জ উভয়েই নিশ্চিত থাকতে পারে।
ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে ডিএসই টাওয়ারের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম, পরিচালক মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম মজুমদার এবং অতিরিক্ত পরিচালক আবুল কালাম আজাদ৷
কর্মশালায় পেপার উপস্থাপন করেন- ডিএসই’র মহাব্যবস্থাপক এবং কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদুর রহমান৷
এসময় তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থ, তহবিল এবং সিকিউরিটিজের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণসহ বাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে ডিএসই’র সকল ট্রেকহোল্ডার, কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক এবং শেয়ারহোল্ডারদের জন্য বিএসইসির পরামর্শে সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করেন ডিএসই।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।