স্টাফ রিপোর্টার: খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের প্রতিষ্ঠান এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারদর গত ১ মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। পাশাপাশি, যোগ হয়েছে নতুন হাস্ক বয়লারে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর খবর। তেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে হাস্ক বয়লারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধন সক্ষমতা (রিফাইন ক্যাপাসিটি) দৈনিক ৩০ মেট্রিকটন থেকে বেড়ে ৭০ মেট্রিকটনে উন্নীত হবে।
এমারেল্ড অয়েলের পর্ষদ একটি নতুন হাস্ক বয়লারে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে মঙ্গলবার (৯ মে) জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তথ্যানুসারে, নতুন এ হাস্ক বয়লারের মাধ্যমে কোনো ধরণের বিপত্তি ছাড়া দৈনিক ২৪ ঘণ্টা অবিরত উৎপাদনে সক্ষম হবে এমারেল্ড অয়েল। প্রতিষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার (১১ মে) থেকে নতুনভাবে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবে।
পুঁজিবাজারে ২০১৪ সালে তালিকাভুক্ত এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ সর্বশেষ ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ ৬ বছর অর্থাৎ, ২০১৭ থেকে ২২ হিসাববছর পর্যন্ত আর কোনো লভ্যাংশ দেয়নি শেয়ারহোল্ডারদের। সঙ্গে রয়েছে অনীয়ম ও লোকসান।
তবে, প্রতিষ্ঠানটির ৩০ জুন, ২০১৭, ১৮ ও ১৯ হিসাববছরের বিচ্যুতির কারণ হিসেবে অফিস ডেকোরেশন বাবদ- ৩২ লাখ ৮০ হাজার ৬৩৬ টাকা, যানবাহনজনিত ১ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৮৪ টাকা, সিকিউরিটি ডিপোজিট-গোডাউন ৮ লাখ টাকা, সিকিউরিটি ডিপোজিট-অফিস স্পেস ৯ লাখ ১ হাজার ৭০ টাকা এবং মালপত্র বাবদ ১২ কোটি ৭৭ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬৪ টাকার কথা জানানো হয। -যার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। আর, ২০১৭ সালের ৩০ জুন এগুলো বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়াও, সৈয়দ হাসিবুল গনি গালিব বা অন্য কোন পক্ষের কাছে ১ জুলাই-২০১৭ থেকে আজ পর্যন্ত কোনো আদায় গ্রহণ হয়নি। তাই প্রাপ্যের পুরো অর্থ (১৫৫ কোটি ৬৬ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৫ টাকা) ত্রুটিপূর্ণ এবং সন্দেহজনক ঋণ হিসাবে দেখানো হয়েছে।
এমোরেল্ড অয়েলের গুরুতর এ অনিয়মের কারণে এপ্রিল-২০১৭ থেকে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তার উপর, প্রতিষ্ঠানটির ২০১৭, ১৮ ও ১৯ হিসাববছরের লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত কারণ জানতে ডিএসইর চিঠির জবাবে সিকিউরিটিজ আইন অমান্য করে প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানির পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য জমা দেয়া হয়নি।
কোম্পানির প্রকাশিত ২০১৮-১৯ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ১৪ পয়সা। দীর্ঘদিন লোকসানে থাকা এবং শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেয়ায় ২০১৮ সাল থেকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয় কোম্পানিটিকে।
অপরদিকে, লভ্যাংশ না দেয়া এবং লোকসানে থাকা সত্ত্বেও ১ মাস ধরে বাড়ছে এমারেল্ড অয়েলের শেয়ারদর। প্রতিষ্ঠানটির গত ১ মাসের শেয়ারদরের বিশ্লেষণে এমন চিত্র দেখা গেছে।
তবে, চলতি ২০২৩ হিসাববছরের ১৮ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চিঠি দেয় ডিএসই। জবাবে অপ্রকাশিত কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে জানায় এমারেল্ড অয়েল।
প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদরের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত ১২ এপ্রিল, বুধবার এর সর্বশেষ দর বা ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৩৫ টাকা ৫০ পয়সা। প্রায় ১ মাসের ধারাবাহিক দর বৃদ্ধিতে মঙ্গলবার (৯ মে) পর্যন্ত ৩৮ টাকা ৯০ পয়সা বেড়ে শেয়ারটির সর্বশেষ দর ৭৪ টাকা ৪০ পয়সায় উঠে আসে। এর মাঝে যদিও, গত ২৪ এপ্রিল এর দর সামান্য অর্থাৎ, ৩০ পয়সা কমে যায়।
এমারেল্ড অয়েলের শেয়ারদর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকলেও বুধবার (১০ মে) অস্বাভাবিক দরপতন হয়। এদিন শেয়াটির দর ৩ টাকা ৮০ পয়সা কমে সর্ব শেষ ৭০ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।